স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে ও স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন জেনে নিন

স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে এবং স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন সম্পর্কে আজকে আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিব। স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে ও স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন নিয়ে লিখা এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে স্বরসতী পূজার নানা অজানা বিষয় জানতে পারবেন। স্বরসতী পূজায় কি কি ফল লাগে ও স্বরসতী পূজার মূর্তী স্থাপনের নিয়মকানুনও জানবেন।
স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে ও স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন। জানবো আমরা। janbo amra
স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে ও স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন।

পোস্টসূচিপত্রঃ স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে ও স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন

ভূমিকাঃ

সকল সনাতনী ভাইদের জানাই নমস্কার,প্রিয় পাঠক সকল নিয়মিত ধর্মীয় প্রতিবেদনের মতো আজও একটি নতুন আপডেট তথ্য নিয়ে আপনাদের সাথে উপস্থিত হয়েছি ।

আমরা নতুন বছরে কোন সময় এবার বিদ্যার দেবী স্বরসতী পূজার যোগ রয়েছে,স্বরসতী পূজার নিয়মকানু, কখন স্বরসতী পূজা উদযাপিত হতে যাচ্ছে , পূজার কর্মসূচি,পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করবার মন্ত্রসহ কিছু অজানা তথ্য জানতে পারবো। তাই আজকের বর্ণিত টপিক ভালোভাবে জানতে বা আপডেট জানতে সবাই পাশে থাকুন।

মাতা স্বরসতী পুজো প্রতি বছরে পালিত হয়ে আসছে অনেক বছর ধরে এবং নতুনভাবে এবং বিগত বছরের ন্যায় তা আবার অনুষ্ঠিত হবে। তাই আমাদের স্বরসতী পুজা সম্পর্কে জানতে হবে। মাতা স্বরসতী পুজো কেবল ছাত্র-ছাত্রীদের উপরে বর্ধিত না ছাত্র-ছাত্রীরা ছাড়াও এ পুজোয় সবাই অংশগ্রহণ করে থাকে এবং পালন করে থাকে।

এই দিনটি হচ্ছে সনাতন ধর্ম অবলম্বীদের একটি বিশেষ দিন। প্রত্যেক ব্যক্তিই বিদ্যা ও জ্ঞান অর্জন করার জন্য এই দেবীর আরাধনা বা উপাসনা করে থাকে।

আজ আমরা কেবলমাত্র শুধু পূজা নিয়ে আলোচনা করব না বরং স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন বা পুজোর পদ্ধতি এবং অন্যান্য বিষয়গুলো উপস্থাপনা করার চেষ্টা করবো যাতে করে আমরা সব কিছু জানতে পারি ।

দেবী স্বরসতীর প্রণাম মন্ত্র 

অউম স্বরসতী মহাভাগে বিদ্যেকোমললোচনে বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহি নমস্তুতে।

স্বরসতী প্রণাম মন্ত্র বাংলায় আনুবাদঃ

হে বিদ্যার দেবি মাতা স্বরসতী, আপনার কমলের ন্যায় চরণ, হে বিশ্বরূপা আমাকে কৃপা পূর্বক বিদ্যা দান করুন, আপনাকে নমস্কার জানাই।

আমাদের সনাতন ধর্মালম্বী সকলেরই ধর্ম জ্ঞান থাকা খুব জরুরী কারণ আপনি যদি পিতা-মাতা হন তাহলে আপনার হাত ধরে আগামী প্রজন্ম গড়ে উঠবে, তাই আপনি স্বয়ং নিজেই ধর্ম জ্ঞান লাভ করুন এবং বাচ্চাদের ছোট থেকে ধর্ম জ্ঞান প্রদান করুন।

সুতরাং অধিক কথা আর না বাড়িয়ে চলুন আমরা জানি স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে এবং স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন।

২০২৪ মাঘ মাসের কত তারিখে  স্বরসতী পূজা হবে

স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে ও স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার আগে সময়সূচি সম্পর্কে জানবো। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও মাতা স্বরসতীর পূজা পালিত হতে যাচ্ছে। নিম্নের তার সময়সূচি উল্লেখ করা হলোঃ

ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ীঃ

তারিখ ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪
দিনঃ বুধবার,
সময় বা যোগ শুরু হবে ১৩ই ফেব্রুয়ারি দুপুর ২:৪১ মিনিট হতে পূর্ণ যোগ শেষ হবে ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪

বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ীঃ

তারিখঃ পহেলা ফাল্গুন ১৪৩১
দিনঃ বুধবার,

সময় বা যোগ শুরু হবে ৩০ মাঘ দুপুর ২:৪১মিনিট হতে পূর্ণ যোগ শেষ হবে পহেলা ফাল্গুন দুপুর ১২:১ মিনিটে।

আমরা সবাই জেনে থাকি যে ঈশ্বরের সাকার রূপ হচ্ছে দেব-দেবী। তাই বলা যেতে পারে ঈশ্বর আমাদের মাঝে মাতা স্বরসতীরুপে বিদ্যা জ্ঞান প্রদান করে থাকে। মাতা স্বরসতী কে যারা নিষ্ঠা, শ্রদ্ধা, ভক্তির সহিত উপাসনা করে থাকে তারাই কেবলমাত্র মাতা স্বরসতীর কৃপা পেয়ে থাকে।

ছাত্র জীবনের স্বরসতী পূজা একান্ত অবশ্যক একটি বিষয়। কারণ মানুষ ছাত্র বা শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় তার আগামী ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা গঠন করে থাকে এবং জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করে, তাই বলা যায় জ্ঞান অর্জন, চরিত্র গঠন, নিষ্ঠাবান শ্রদ্ধাবান এবং সৎ নির্ভীক চরিত্র গঠন না করতে পারলে মানুষ হিসেবে পিছিয়ে যাবে।

আর কি কি উৎসব থাকছে এই দিনটিতে

প্রতিবছরের ন্যায় এই নতুন বছরের মাতা স্বরসতী পুজা সহ ১৪ ই ফেব্রুয়ারি দিনটিতে আরো কিছু দিবস জড়িত থাকছে । সে সব দিবস হচ্ছে হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে (happy valentines day) বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সুন্দরবন দিবসও পালিত হবে ১৪ ই ফেব্রুয়ারি।

তাই বলায় যেতে পারে দিনটি অনেক বিশেষ উদ্দীপনা, উল্লাস এর মাধ্যমে পালিত হবে। এখন চলুন স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন ও স্বরসতী পূজার অঞ্জলি মন্ত্র সম্পর্কে জানা যাক।

স্বরসতী পূজার অঞ্জলি মন্ত্র 

স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন এর মধ্যে অঞ্জলি মন্ত্রটিও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ইতিপূর্বে পূজার কর্মসূচি, দিন বার গুলো জেনেছি এখন আমরা এই অনুচ্ছেদের মাধ্যমে কোন মন্ত্র পাঠ বা জপ করলে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করা হবে তা সম্পর্কে জানব। তাই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে অনুচ্ছেদ পড়ুন।

ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে

কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে,

বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে

ভগবতী স্বরসতী দেবী নমহস্তুতে।।

নমঃ ভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং

মাতা সরস্বত্যৈ নমো নমঃ।

বেদ বেদাঙ্গ বেদান্ত বিদ্যা স্‌হানেভ্য এব চ।

এসো স-চন্দন পুষ্পবিল্ব পত্রাঞ্জলি মাতা সরস্বতৈ নমঃ।।

মাতা স্বরসতী জপ মন্ত্র নিলে কি হয়

স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে জানার আগে স্বরসতী জপ মন্ত্র সম্পর্কে জেনে নেই। প্রিয় পাঠক সকলে ইতিমধ্যে আমরা মাতা স্বরসতীকে কেন্দ্র করে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য সমূহ জেনেছি। আমরা এখন এই নতুন অনুচ্ছেদের মাধ্যমে মাতাকে প্রশন্ন করার জন্য স্বরসতী জপ মন্ত্র বা বিজ মন্ত্র সমূহ সম্পর্কে জানব।

যদি আপনারা মন্ত্র সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে অনুচ্ছেদটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আমরা সকলেই জানি যে জপ, ধ্যান, পূজা অর্চনা করলে আমাদের দেহ ও মন পবিত্র হয় ও ধৈর্য শক্তি বৃদ্ধি পায়। আমাদের শিক্ষার্থী ভাইবোনদের জন্য এই মন্ত্রটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাক।

কেননা আমাদের মনকে শান্ত রাখার জন্য সব সময় একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে থাকে যেটা সবাই পারেনা, তাই আমরা যদি কিছু সময়ের জন্য সরস্বতী জব মন্ত্র বা বীজ মন্ত্র জপ করতে পারি তাহলে আমাদের মন কে আমাদের নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে আসতে পারবো।

মা সরস্বতীর বীজ মন্ত্রটি হলঃ " ওম অং সরস্বথ্যে নমঃ " এই মন্ত্রের অর্থ হলো "দেবী সরস্বতীকে নমস্কার "। এই বীজ মন্ত্রটি 108 বার জব করা উচিত। এই মন্ত্রটি জপ করার মাধ্যমে ভক্তদের জীবনে নানা শুভ ফল এনে দেয়।মা সরস্বতীর অন্যান্য মন্ত্র গুলোর মত এই বীজ মন্ত্রের মাহাত্ম্য অপরিসীম।


স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে

  • স্বরসতী দেবীর মূর্তি বা ছবি।
  • নতুন সাদা কাপড় লাগবে যা পরিষ্কার থাকতে হব।
  • বেল পাতা ও আম পাতা ।
  • ফুল, পদ্ম,ও লিলি এবং পলাশ ফুল ও জুই ফুল থাকলে ভালো হয়।
  • পাঁচ রকমের ফল লাগবে যেমনঃ নারকেল,কলা,আপে, কুল বা বড়োই,খেজুর।
  • দুধ, কাঁচা হলুদ, সিঁদুর, প্রদীপ, চাল, ধান, ডাব। 
  • ধুপকাঠি, পানপাতা, কলম বই খাতা।

ইতিমধ্যে আমরা সংক্ষিপ্তভাবে জেনে গেলাম যে স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে।

নিয়ম পালন করতে স্বরসতী পূজার কি কি লাগে

স্বরসতী পূজার দিন সকাল সকাল উঠতে হবে। প্রভাতকালে স্নান করতে হবে বা ব্রহ্মমুহূর্তে স্নান করতে হবে। স্নান করার সময় জলে তুলসী পাতা ও নিম পাতা দিয়ে জল শুদ্ধিকরণ করতে হবে। এছাড়া স্নান করার আগে মুখে এবং গায়ে কাঁচা হলুদ বাটা মাখতে হবে সাথে নিমপাতা থাকবে।

তাহলে আমাদের দেহে শুদ্ধিকরণ ঘটবে ও কোনো রকোম ইনফেকশন হতে পারবেনা, বলতে পারি এই মিশ্রণ রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন কিছু হলেও জানতে পারলেন।

স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে আরাধনা করতে | আর কি চাওয়া হয়

আমরা সবাই জানি যে, স্বরসতী হচ্ছেন সংগীত ও বিদ্যার দেবী মূলত দেবী স্বরসতী কে বিদ্যা ও সংগীতের দেবী হিসেবে আরাধনা করা হয। পৃথিবীতে অনেক দেশেই স্বরসতী পুজা করা হয় বা আরাধনা করা হয়। তবে উত্তর ভারত পশ্চিমবঙ্গ, নেপাল, বাংলাদেশে স্বরসতী পুজা বিশেষ ভাবে পালিত হয়ে থাকে।

পঞ্চমীর দিন বাঙালির প্রতিটি ঘরে ঘরে হয়ে থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও পালিত হয়ে থাকে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের গৃহে ও সর্বজনীন পূজা মন্ডপে দেবী স্বরসতীর পূজা করা হয়। পূজার দিনে সন্ধ্যাকালীন অনেক অনুষ্ঠানাদি হয়ে থাকে। কীর্তন পরিবেশন, নৃত্য পরিবেশন, ধর্মীয় শাস্ত্র প্রতিযোগিতামূলক অনেক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে ।

মূর্তি স্থাপন করতে স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে



দেবী স্বরসতী পূজার মূর্তি স্থাপন কলস আর যা যা স্থাপন করা হয়ে থাকে সাধারনত পুজোর জন্য যে জায়গাটা নির্ধারিত করা হয়, সে জায়গাটা ভালো করে পরিষ্কার করে নিয়ে এবং মুছে কাঠের তৈরি একটি ছোট জলচৌকি বসাতে হবে।

তবে এটি ছাড়াও হতে পারে অন্য কোন বসানোর ভালো কিছু থাকলে সেখানে বসাতে পারেন। তারপর একটা সাদা কাপড় দিয়ে সেই কাঠের জলচকিতে পেরে দিতে হবে। এরপর দেবী স্বরসতীর মুর্তিটি এর উপরে স্থাপন করতে হবে।

এছাড়াও স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে জলচকির উপর দেওয়া লাগে ভোগ ধূপধুনা লাগিয়ে সজ্জিত করতে হবে। দেবীর মূর্তিকে ফুলের মালা পরিয়ে সুসজ্জিত করার পরে ভালো করে হলুদ সিঁদুর এবং চাল দিয়ে আলপনা দিতে হবে। এছাড়াও অনেকে পুরো স্থানটিতে ফুল দিয়ে অনেক সুসজ্জিত করে সুন্দর দেখানোর জন্য।

এবার পাশেই খাতা, বই, পেন্সিল, কলম এক কথায় একজন ছাত্র-ছাত্রীর যে সামগ্রী সমূহ লাগে পড়াশোনা করতে সব দিতে হবে। আমরা আরো জানবো যে স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে সঙ্গীতের সকল বাদ্যযন্ত্রাংশ যেমন হারমোনিয়াম, মৃদঙ্গ, বাঁশি দেবী স্বরসতীর মুর্তিটির পাশে রাখতে হবে।

সেখানেও ফুল দিয়ে সুসজ্জিত করতে হবে। কালির দোয়াতগুলি দুধ দ্বারা পূর্ণ করতে হবে এবং তাতে খাগের কলম গুলি রাখতে হবে। এগুলো দেবী স্বরসতীর মুর্তিটির সামনে রাখতে হবে। এবার কলস বা ঘট গুলো জল দিয়ে পরিপূর্ণ করে এর উপরে আমের পল্লো দূর্বাঘাস ও ধান দিতে হবে।

সুপারি ও পানপাত্র রেখে দিতে হবে। দেবী স্বরসতীর মূর্তিটির পাশে একটি গণেশ ঠাকুরের মূর্তি রেখে দিতে হবে। প্রথমে ফুল ও বেলপাতা নিয়ে গণেশ ঠাকুরের চরণে অর্পণ করে পূজা আরম্ভ করতে হবে। আমরা জানলাম মূর্তি স্থাপন করার জন্য স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে এবং মূর্তি স্থাপন করার জন্য স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন।

স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে ভোগ  দিতে, আর কি কি খাওয়া যাবে না

স্বরসতী পূজায় ভোগ মানেই খিচুড়ি,সবজি এবং পায়েস ইত্যাদি দেওয়া হয়। অঞ্জলি দেওয়ার পর সাধারণত নিরামিষ খাওয়ারই ঐতিহ্য বা নিয়ম নীতি চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। তা আমরা পালনও করে থাকি বটে। তবে অনেকে অনেক রকম ভাবে ভোগ দিয়ে থাকেন ভিন্ন রকমের স্বাদ নিয়ে আসার জন্য।

পূজোর দিন নানান রকম ব্যস্ততাই কাটে সকাল। আর তাই সবারই অনেক পরিশ্রম হয়ে যায, তখন আপনি চাইলে কিছু বানিয়ে খেতে পারেন। বানিয়ে ফেলুন নিরামিষ পোলা এবং দুধ দিয়ে মিষ্টান্ন ও পায়েস। ভোগ দেওয়া সম্পর্কে স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন জানলেন।

স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে ফল | আর কুল খাওয়া যায় না কেন 

শাস্ত্রে কথিত আছে যে স্বরসতী পূজার আগে কুল খাওয়া নিষেধ। কিন্তু পূজোর আগে কুল খাওয়া নিষেধের ব্যাপারটি এলো কিভাবে চলুন জেনে নেই। বাড়িতে বড়রা সবসময় বলে থাকে পুজোর আগে এটা খাওয়া যাবেনা। পুজোর অঞ্জলি দিয়ে তারপরে কুল প্রসাদ হিসেবে খাওয়ার প্রচলোন বহুদিন ধরে।

পৌরানীক কাহিনী অনুসারে যা জানা যায়, দেবী স্বরসতী কে তুষ্ট করার জন্য মহামুনি ব্যাসদেব দীর্ঘদিন তপস্যা করেছিলেন। কিন্তু কেন ব্যাসদেব দীর্ঘদিন তপস্যা করেছিলেন দেবী স্বরসতী কে তুষ্ট করার জন্য এবং দেবী স্বরসতীর কি শর্ত ছিল ।

মহামুনি ব্যাসদেব তার তপস্যা শুরুর আগে তার তপস্যা স্থলের কাছে, দেবী সরস্বতী একটি কুল বিজ রেখে বলেন যে, এই কুল বীজ অঙ্কুরিত হয়ে চারা এবং তারপর বড় গাছ হবে, গাছে ফুল হবে ও সে ফুল থেকে কুল হবে। সেই কুল যেদিন পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পড়বে, সেই দিনই দেবী সন্তুষ্ট হবেন।

সেই শর্ত মেনে নিয়ে ব্যাসদেব তপস্যা শুরু করে দেন। পরিশেষে ব্যাসদেবের তপস্যা পূর্ণ হয়। সেই দিনটি ছিল পঞ্চমী দিন। সেই দিন স্বরসতী কুল নিবেদন করে ব্রহ্মসূত্র রচনা আরম্ভ করেছিলেন। তাই আমরা কেউ এই দিনের আগে কুল খাইনা।

আর এখানে একটা মজার বিষয় হলো যে, ছোটরা বোঝেনা বলে বাড়ির বড়রা তাদেরকে বোঝায়। সরস্বতী পূজার আগে কুল খেলে পড়াশোনায় ভালো হওয়া যায় না বা পরীক্ষায় কখনোই পাস হওয়া যায় না এমনটা না। তবে সরস্বতী পূজার আগে কুল না খাওয়াটাই ভালো।

কেননা এ সময় শীতকাল চলে আসে এবং স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে দেখা যায় যে অনেক রোগও চলে আসে।কেননা মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ের দিকে কুল কাঁচা বা কসযুক্ত থাকে। এই অবস্থায় কুল খেলে পেটের সমস্যা ও শারীরিক অন্যান্য ক্ষতি হতে পারে। কুল খাওয়ার ক্ষেত্রে স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন কি বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়।

 স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে পোষাক

 যেদিন স্বরসতী পূজা হয় সে দিনটিকে বসন্ত পঞ্চমী বলা হয়। আর এই দিনটিতে হলুদ রং কে ভালো বা শুভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূলত এর কিছু কারণও রয়েছে বটে। আমরা সবাই জানি যে ষড়ঋতুর শেষ ঋতু হলো বসন্ত। বসন্ত ঋতুকে ষড়ঋতুর ভাগ্যবান মৌসুমী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বলা হয় বসন্ত ও হলুদ রং একে অপরের পরিপূরক। এই সময় প্রকৃতি হয়ে ওঠে ঝলমলে কেননা সূর্যের উজ্জ্বল আলো, কঠোর শীত এবং ভারী বৃষ্টির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে বসন্তকাল। আমরা জানি এই ঋতুতে নতুন পাতা গজায় গাছে, তাজা ফল এবং ফুল ফোটে ।

তাছাড়া বিশ্বাস করা হয় যে, বসন্ত পঞ্চমীতে সূর্যের উচ্চারণ ঘটে। তখন পৃথিবীর ওপর আসা সূর্য হলুদ রাশি সমৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। সবকিছু কে করে তোলে সূর্যের মতো সতেজ। আমরা এইখান থেকে জানলাম স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে পোষাক বা পরোনের কাপড় কেমন লাগবে। 

পরিশেষেঃ

স্বরসতী পূজায় কি কি লাগে এবং স্বরসতী পূজার নিয়মকানুন সম্পর্কে আশা করি আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে লিখবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url