কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে - বড়দের এবং শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কি
শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কি এবং কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে সেই বিষয়গুলো নিয়েই আজকে আমাদের এই আর্টিকেল। এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন আপনাদের অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগে কোন ভিটামিনের অভাবে। শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কি শুধু ভিটামিনের অভাব নাকি কোন জটিল কারণ রয়েছে সেটিও আপনি জানতে পারবেন।
কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে। বড়দের এবং শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কি। |
ঠান্ডার সময় ঠান্ডা লাগবে এটাই স্বভাবিক কিন্তু অনেকেই আছেন যাদের বিভিন্ন রোগের কারণে বা বিভিন্ন ভিটামিনের অভাবে অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে এবং কি কি সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগে সেগুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ এ বার বার ভোগান্তি যাতে না হয় সেই বিষয় গুলোও রয়েছে।
সূচিপত্রঃ কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে - বড়দের এবং শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কি
ভূমিকাঃ
ঋতু পরিবর্তন, আবহাওয়া পরিবর্তন এবং বিভিন্ন কারণে ঠান্ডা লাগাটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে এবং বড়দের ও শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কি। অনেকেই আছে যাদের সারা বছরই ঠান্ডা লাগে অর্থাৎ অন্যদের তুলনায় ঠান্ডা বেশি লাগে।
যাদের সব সময় ঠান্ডা লাগে এবং যেসব শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ এ ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে। কোন কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে এবং বড়দের ও শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আপনার কি অন্যদের তুলনায় বেশি ঠান্ডা লাগে?
আপনি যদি অল্পতেই ঠান্ডাতে কাঁপতে থাকেন এর পিছনে থাকতে পারে সব মারাত্মক ধরনের কারণ। কোন কোন সময় এটি হতে পারে (Unsplash)হঠাৎ ঠান্ডা লাগা বা সর্দি জ্বর হওয়া খুব একটি সাধারণ বিষয় হয়ে থাকে সর্দি জ্বর হাসি কাশি মানুষকে খুব সামান্য কারণেই ভোগান্তি করতে পারে তেমনি সহজে সেড়েও যেতে পারে।
অনেকসময় শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণে সবসময়ই অসুস্থ থাকতে দেখা যায়। সাধারণত ঠান্ডা লাগা বা সর্দি জ্বরের বেশ কিছু সাধারণ উপসর্গ থাকে যেগুলো শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে একই রকম হয়ে থাকে। এক সময় ধারণা করা হতো এটি একটি বিশেষ গোত্রের ভাইরাসের মাধ্যমে শুধু সর্দি হয়।
তবে আশির দশকের বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয় যে এর মোট সাতটি গোত্রের ভাইরাসের কারণে সর্দি জ্বর হয়ে থাকে। ঠান্ডার মৌসুমি বা শীতের সময় এই ভাইরাস গুলো দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে এবং এর কারণ হলো শীতকালের পরিবেশ।
অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার কারণ
শীতকালে সকলেরই ঠান্ডা লাগে কিন্তু অনেকেরই তুলনামুলক ঠান্ডা বেশি লাগে। আবার অনেকেই আছেন যাদের প্রায় সারাবছরই ঠান্ডা লাগে। তাহলে চলুন যাদের অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগে তাদের নিচে আলোচিত কোন সমস্যা আছে কিনা জেনে নেওয়া যাক।
ডায়াবেটিস
শীতকালে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন অন্যদের তুলনায় যে সমস্ত ডায়াবেটিস রোগী আছে তাদেরকে স্বাভাবিকভাবেই বেশি ঠান্ডা লাগে। কারণ এই রোগ শুধু কিডনিতেই প্রভাব ফেলে না, মানুষের শরীরে রক্ত সঞ্চালনের প্রভাব ফেলে।
শীতকালে তাই যদি কারো বেশি ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং আপনার ডায়াবেটিস চেকআপ করান। শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কিন্তু ডায়াবেটিস না। কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে এবং শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কি আস্তে আস্তে জানতে পারবেন পড়তে থাকুন।
ঘুম না আসা বা পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
মস্তিষ্কের সমস্যা হতে পারে যদি ঘুম পর্যপ্ত না হয়। ফলে ঠান্ডা লাগে এবং এই পদ্ধতিতে শরীরের তাপের উপর প্রভাব ফেলে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আমদের শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনেরও অভাব দেখা দেয় যার ফলে আমাদের ঠান্ডা লাগতে পারে। কোন কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে জানলে আপনারা অনেকটাই সচেতন হতে পারবেন।
রক্তস্বল্পতা
রক্তের নিজস্ব একটি উষ্ণতা আছে যা অনেক ভাবেই বোধগম্য হয়ে থাকে, রক্তস্বল্পতার কারণে অনেকে অনেকভাবে তা বুঝতে পারে যেমন হলো হাতে, পায়ে বেশি শীতবোধ করেন এবং অন্যান্য যে বিষয়গুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো শরীর দুর্বলতা, মাথা ঘোরানো, অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ হওয়া অল্পতেই হাঁপিয়ে যাওয়া শরীরকে সবসময় ঠান্ডা অনুভূতি হওয়া।
রক্তস্বল্পতা হলে আমাদের যা যা করণীয়
রক্তস্বল্পতা নানান কারণে হয়ে থাকে তবে সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো আয়রন ও লোহের ঘাটতি। নারীদের অতিরিক্ত ঘন ঘন রক্তস্রাবের কারণ রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে এছাড়া বিভিন্ন রোগ যেমন -আলসারের কারণে দেখা দিতে পারে। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রক্তকণিকা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
রক্তস্বল্পতা হলে আমরা রক্তে ঘাটতি পূরণে, যেসব খাদ্য রক্তস্বল্পতা পূরণ করে সেগুলো আমরা খেতে পারি। এছাড়াও নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে পারি।
স্নায়ুর সমস্যা
স্নায়ু সমস্যা রোগীদের শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডায় ভুগতে হয় এবং এসব রোগীর ঠান্ডা প্রবণতা বেশি দেখা দেয় এর সঙ্গে আরো অনেক রকমের সমস্যা দেখা দেয়, ক্লান্তি আসা, মাথা ঘোরা, চোখ জ্বালাপোড়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, ঘুম ঘুম ভাব হওয়া। শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ স্নায়ুর সমস্যা নাও হতে পারে।
ভাইরাস কি শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ
কোন কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে বলার আগে আপনাদেরকে ভাইরাস সম্পর্কে কিছু বলি। এখন চলে এসেছে শীতকাল এ সময় ঠান্ডার চেয়ে বেশি ভাইরাসে ভোগাতে পারে। এ সময় বাইরের নানান ধরনের ভাইরাস জন্ম নিয়ে থাকে। সবচেয়ে পরিচিত ভাইরাস হলো রাইনোভাইরাস ।
বেশিরভাগ সময়ের ঠান্ডা লাগলে তিনটি বিষয়ে আমরা বুঝতে পারবো যেমন গলা ব্যথা, নাক বন্ধতা বা নাক থেকে তরল ক্ষরণ, নাক দিয়ে পানি পড়া,কাশি ইত্যাদি। বলা যায় ঠান্ডা লাগানোর জন্য অনেক ধরনের কারণ বা ভাইরাস রয়েছে।
এগুলো প্রতিনিয়ত আমাদেরকে আক্রান্ত করে চলেছে। তাই এইগুলো এড়িয়ে দিয়ে এবং এর থেকে সচেতন হতে হবে, আমদের দেখা যায় অনেক সময় সতর্কতা অবলম্বন করি না এবং এর কারণে আমাদের অনেক বড় বড় রোগ হয়ে যায়।
শীতকালে ঔষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ঠান্ডায় যে উপসর্গ সবশেষে দূর হচ্ছে না তাহলো কাশি। এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঔষুধ সেবন করার পরেও যদি চলে না যায় বা আপনি সুস্থ না হোন তাহলে এটা ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী শুষ্ক কাশী হচ্ছে লিছিনোপিল, বিনাজেপিন ও রেমিপিলের মতো সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
এগুলো হচ্ছে রক্তচাপের ঔষধ, কিন্তু আমাদের শরীরে নাক থেকে যে তরল বের হয়ে থাকে এবং গলা ব্যথা ও চাপ এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নয় বলে বিবেচিত হয়ে থাক।
তাই আপনি এসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এড়াতে ডক্টরের শরণাপন্ন হবেন এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করার জন্য বলবেন, তারা প্রেসক্রাইব করার জন্য অনুরোধ করতে পারে। শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারনেও হতে পারে।
এলার্জি - শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ কি
কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে জানার আগে আমরা জেনে নেই এলার্জির কারণে কেন ঠান্ডা লাগে। নাক থেকে তরল ক্ষরণ কাশির অন্যতম কারণ হতে পারে, ডাক্তার স্কট বলেন যে এলার্জি ভাইরাস অসুস্থতার উপসর্গকে নকল করতে পারে ।
ডক্টর স্কট আরো বলেন, মৌসুমের ওপর ভিত্তি করে এলার্জি উপসর্গ দীর্ঘ সময় লেগে থাকতে পারে এবং এর সাথে চুলকানি অনুভূতি হতে পারে সাথে চোখ থেকে পানি পড়তে পারে। শীতকালে ঠান্ডার সময় এসব অনেক বেশি দেখা দেয়।
এ সময় যারা বাইরে বেশি সময় অবস্থান করে থাকেন,রাস্তাঘাটে চলাফেরা করেন,কর্মস্থলে কর্ম করেন অনেক শীত লাগার কারণে তাদের বাইরের এলার্জি দ্বারা এলার্জি হতে পারে।
ব্যাকটেরিয়াল সাইনুসাইটিস
কখনো কখনো ভাইরাস অসুস্থতার শেষ পর্যায়ে বা নিরাময়ের পর সাইনাসে চাপ সৃষ্টি করে থাকে। মাথা ব্যাথা ও জ্বরের মতো নতুন উপসর্গের আবির্ভাব ঘটাতে পারে বলেন ডক্টর স্কট। তিনি অনেক ব্যাখ্যা করেন এমনটা ঘটে কারণ ঠান্ডা জনিত নাকবদ্ধতা থেকে ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তার এর জন্য।
আদর্শ পরিবেশ গড়ে ওঠে এর ফলে সাইনাস ইনফেকশন হতে পারে কখনো কখনো। সাধারণত ঠান্ডা লাগার ১০ থেকে ১৪ দিন পর ব্যাকটেরিয়াল সাইনোসাইটিস হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ অতি আবশ্যক বলে গণ্য করা হয়ে থাকে।
চিকিৎসক যে বিড়ি নিষেধ গুলো দিয়ে দেয়, সেগুলো মেনে চলতে হয় বরাবরই। সেগুলো মেনে চললে আমরা সুস্থ থাকতে পারব। শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ ব্যাকটেরিয়াল সাইনুসাইটিস ও হতে পারে।
নিউমোনিয়া কি শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ
আপনার প্রতিনিয়ত কাশি হয়ে থাকলে এবং এর সঙ্গে পাকস্থলী থেকে বাদামি বা সবুজ সেম বের হলে, আসলে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বুঝতে পারবেন যে এটা একটি নিউমোনিয়ার মত ইনফেকশন এর লক্ষণ।
অধিকাংশ লোকের সাধারণত খারাপ অনুভূতি হয়ে থাকে।এর অভিযোগে জানান যে ফুসফুসে ব্যথা হচ্ছে। এমফিসেমার এর মতো দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুস রোগ হয়েছে এই সমস্ত লোকদের সাধারণত যে সমস্যা বেশি দেখা দেয় তাহলো নিউমোনিয়া।
কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ লোকেরাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আপনার এইসব উপসর্গের কোনটা সুধগম্য হলে বা বুঝতে পারলে যত সম্ভব ভালো কোন ডাক্তার এবং চেকআপ করাবেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ নিউমোনিয়া হতে পারে।
কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে
ঠান্ডা লাগাটা স্বাভাবিক কিন্তু অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার পিছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। বিভিন্ন কারণের মধ্যে ভিটামিনের অভাবে যে অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগে সেটা অনেকেই জানেন না। তাহলে চলুন কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে জেনে নেওয়া যাক।
ভিটামিন বি ১২- এর অভাব
কোন কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে তা আপনারা এখনি জানতে পারবেন। ঠান্ডা লাগা, ক্লান্তি আসা, ক্ষুধা হ্রাস, ভিটামিন বি ১২- এর অভাবের লক্ষণ। এর ঘাটতি পূরণ করতে আমরা যেগুলো খেতে পারি নিচে তার তালিকা দেওয়া হলোঃ দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি।
সময়মতো পানি খাওয়া উচিত যাতে শরীরে ভিটামিন ১২- এর পরিমাণ কমে না যায়। তাই আমাদের মানবদেহে এই ভিটামিন সহ আরো অন্যান্য যে ভিটামিন গুলো রয়েছে সবগুলোর ও ঘাটতি পূরণ করা উচিত।
আরো পড়ুনঃ মাথার খুশকি দূর করার উপায় ও কেন হয়?
অক্সিজেন বহন করার জন্য ভিটামিন ১২- এর প্রয়োজন হয়, যা শরীরে লোহিততাপের ভারসাম্য ধরে রাখতে, রক্তকণিকা উৎপাদন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। ভিটামিন ১২-এর অভাব দেখা দিলে লোহিত কণিকা কমে যেতে পারে এবং এর কারণে ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব দীর্ঘস্থায় হতে পারে।
যদি বেশি সমস্যা বোধ হয়ে থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ ভিটামিন বি ১২- এর অভাবও হতে পারে।
আয়রন ঘাটতি
কোন কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে তার মধ্যে আয়রনের ঘাটতি গুরুত্বপূর্ণ। আয়রন ঘাটতি শীতকালে অতিরিক্ত শীত লাগার প্রবণতাকে বাড়িয়ে দেয়। অক্সিজেন বহন করার জন্য মিনারেল লোহিত রক্তকণিকার প্রয়োজন হয় যার প্রধান এবং অন্যতম মাধ্যম হলো আয়রন।
যা আমরা পানি খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের চাহিদা মেটাতে পারি, কিন্তু শীতকালে পানি খাওয়া হয় কম কারণে এর প্রভাব দেখা দেয়। আয়রনের অভাব শরীর দেখা দিলে লোহিত রক্তকণিকা ভালোভাবে কাজ করতে পারে না। শরীরে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে হলে তাপের ভারসাম্য ঠিক রাখতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন শীতকালে শরীরে উষ্ণতা ধরে রাখতে এবং শীত শীত ভাব কমাতে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এজন্য বলা যেতেই পারে যে দৈনিক একজন মানুষের অন্ততপক্ষে ৮ থেকে ৯ গ্লাস পানি পান করা উচিত। শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ আয়রনের ঘাটতিও হতে পারে।
কলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে
কলাতে রয়েছে বিভিন্ন রকমের পুষ্টি যা ছোট বড় সকলেরই পছন্দের একটি ফল। কলাতে রয়েছে ভিটামিন বি, ফোলেট, পটাশিয়াম, নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, রিবোফ্লাভিন ইত্যাদি। অনেকেই শীতকালে ঠান্ডার জন্য কলা এড়িয়ে চলেন কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে ঠান্ডায় কলা খাওয়াতে কোন বাধা নেই।
কলা খেলে ঠান্ডা লাগে এমন কথা মোটেও সঠিক নয় বিশেষজ্ঞদের মতে। তবে হ্যাঁ যাদের অ্যাজমা, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এসব সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কলা খেলে সমস্যা হতে পারে। কলায় পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকায় যারা রেনাল ফেলিওরে ভুগছেন অথবা পটাশিয়ামের সমস্যা হয় তাদের কলা না খাওয়াই ভালো।
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা পরিমাণ মতো কলা খেলে কোনরকম সমস্যা হয় না। কারণ কলাতে থাকা ফাইবার রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহযোগিতা করে।
সর্দিজ্বর কেন হয়ে থাকে
কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে এবং শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণ আমরা জেনেছি। এখন জানবো আমরা সর্দিজ্বর কেন হয়। ঔষধ তৈরি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার ডাক্তার আফরোজ আক্তার বলেন একটি শিশুর প্রতি বছরে দেখা যায় যে ১১ থেকে ১২ বারের মত সর্দি জ্বর হয়।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির বছরে ৪ থেকে ৬ বার সর্দি জ্বর বিষয়টাকে স্বাভাবিক হিসেবে গণ্য বলা হয়েছে। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি রোগ হওয়ার মধ্যে সর্দি জ্বর অন্যতম। সর্দি জ্বর হওয়া একটা খুবই সাধারণ বিষয় যা যেকোনো সময় যেকোন মানুষের হয়ে থাকে।
সাধারণভাবে কিছু বিষয় বা উপসর্গ থাকে যেগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের ও শিশু ক্ষেত্রে একই রকম হয়ে থাকে,
- গলা ব্যথা
- কাশি
- নাক বন্ধ হওয়া সর্দি থাকা
- হাঁচি
- জ্বর
- ঘ্রাণ এবং স্বাদের অনুভূতি কমে যাওয়া
সর্দি জ্বর থেকে বাঁচতে হলে সাধারণ কিছু করণীয়
- গরম পানি ব্যবহার করতে হবে, গরম পানি পান করতে হবে।
- ঠান্ডা লাগবে এমন কিছু করা যাবে না।
- ঠান্ডা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর নিজের চোখ বা নাক স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- উষ্ণ পরিবেশে থাকার চেষ্টা, সর্দি জ্বরের সময় আমরা যদি উষ্ণ পোশাক পড়ে থাকতে পারি তাহলেও আমরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারব।
মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা ঘুম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় , কাজেই ঠান্ডা বা সর্দি জ্বরের সময় ঘুম পারলে বা বিশ্রাম নিলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।
এছাড়াও আমাদের খাবারে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসার দরকার, যেমন: ১ মিষ্টি আলু, বিটের মূল, বিশেষ ধরনের কুমড়ার প্রচুর পরিমাণ বেটা-ক্যারোটিন থাকে যা আমাদের দেহে ভিটামিন-এ তে রূপান্তরিত করে।
ভিটামিন-এ আমাদের দেহোকে অনেক রোগ সংক্রমণ থেকে বাঁচায় যেমন : ফুসফুস কে ইনফেকশন এর হাত থেকে বাঁচায় মিউকোসাল লাইনিংকে শক্ত রাখে। পাশাপাশি কমলা, আম, তরমুজ, লাল ফল একই ধরনের কাজ করে থাকে।
এছাড়া খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ ও রসুন থাকলেও ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়, পেঁয়াজ ও রসুনে এ এক ধরনের তেল থাকে যা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।
আমাদের শরীরকে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য অনেক কার্যকরিতা হয়ে থাকে সূর্যের আলো বা অন্য কোনো উৎস থেকে ভিটামিন-ডি' গ্রহণ করে। যেহেতু আমরা জেনেছি কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে তাই আমাদের অবশ্যই সেই ভিটামিন যুক্ত খাবার গুলো খেতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন কখন
ডাক্তার বলেন সর্দিজ্বর সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে সেড়ে না গেলে অর্থাৎ বেশি দিন যদি থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাতদিনের বেশি সর্দিজ্বর থাকলে এবং উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বর থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ শীতে ত্বকের যত্ন
শিশুদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে সাতদিনের আগে, এবং সাতদিনের অপেক্ষা না করার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। শিশুদের তিন দিনের বেশি সর্দিজ্বর থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত বলে মনে করেন। এবং ডাক্তাররা আরো বলেন সর্দির সময় শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হলে বা বুকে ব্যাথা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পরিশেষে
আশাকরি আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন কোন ভিটামিনের অভাবে ঠান্ডা লাগে এবং শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার কারণগুলো। এই আর্টিকেল সম্পর্কে যদি আপনার কোন মন্তব্য থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট বক্সে লিখবেন।
জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url