প্রবাসীরা কি দুবাইতে সম্পত্তি কিনতে পারবে ও দুবাইতে বাড়ি বানাতে কত টাকা লাগে জানুন
প্রবাসীরা কি দুবাইতে সম্পত্তি কিনতে পারবে। ও দুবাইতে বাড়ি বানাতে কত টাকা লাগে |
সূচিপত্রঃ প্রবাসীরা কি দুবাইতে সম্পত্তি কিনতে পারবে ও দুবাইতে বাড়ি বানাতে কত টাকা লাগে।
ভূমিকাঃ
আপনারা অনেকেই দুবাই এ জমি কিনতে চাচ্ছেন কিন্তু কিনার জন্য সঠিক নিয়মকানুন ও কত টাকা লাগবে তা জানেন না। এই সকল বিষয় আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন প্রবাসীরা কি দুবাইতে সম্পত্তি কিনতে পারবে কিনা জানা যাক।
প্রবাসীরা কি দুবাইতে সম্পত্তি কিনতে পারবে?
হ্যাঁ অবশ্যই, প্রবাসীরা ডুবাইতে সম্পত্তি কিনতে পারবে। দুবাইয়ের এমন কিছু কিছু জায়গা রয়েছে যেই সব এলাকায় প্রবাসীরা সম্প্রতি কিনতে পারে। ফ্রি হোল্ড এলাকা গুলো।
দুবাইতে প্রবাসীরা বিভিন্ন ধরনের সম্পত্তি কিনতে পারেন। যেমনঃ অ্যাপার্টমেন্ট, ভিলা, কমার্শিয়াল প্রপার্টি। প্রবাসীদের জন্য দুবাইতে জমি কেনা সহজ। নিয়ম কানুন মেনে সেখানে জমি কেনা যায়। প্রবাসীদের দুবাইতে জমি কেনার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। এখানে প্রধান কিছু শর্ত উল্লেখ করা হলোঃ
১। ফ্রি হোল্ড এলাকা
প্রবাসীরা শুধুমাত্র দুবাইতে এলাকাগুলোতেই জমি কিনতে পারবে। এই এলাকা গুলো শুধুমাত্র প্রবাসী এবং বিদেশীদের জমি কেনার অধিকার রয়েছে।
২। বয়স সীমা
দুবাইতে একটি কেনার জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমা রয়েছে। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে ২১ বছর অথবা এর বেশি বয়স হতে হবে।
৩। ডকুমেন্ট
দুবাইতে ফ্রি হলে এলাকায় জমি ক্রয় করার জন্য আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। যেমনঃ বৈধ পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয় পত্র, ভিসা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
৪। চুক্তি
সম্পত্তি কেনার সময় অবশ্যই একটি বিক্রয় চুক্তি করতে হবে। যেখানে ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়পক্ষের স্বাক্ষর থাকবে।
৫। অগ্রিম পেমেন্ট
জমি কেনার জন্য আপনাকে অগ্রিম কিছু পেমেন্ট করতে হবে।(সাধারণত ১০%)
৬। বিষয়ক ফ্রি এবং ট্যাক্স
দুবাইতে বাড়ি বানাতে কত টাকা লাগে?
১। জমির মূল্য
জায়গা এবং এলাকা অনুযায়ী জমির মূল্য ভিন্ন হতে পারে। কারণ সব জায়গাতে একই জমির মূল্য হয় না। দুবাইতে কিছু প্রাইম লোকেশন রয়েছে যেমনঃ জুমেইরাহ, ডাউনটাউন ডুবাই অথবা মারিনা এলাকাতে তুলনামূলক জমির দাম অনেক বেশি।
২। বাড়ির নকশা এবং আকার
বাড়ি বানানোর খরচ বাড়ির নকশা এবং আকারের ওপরও নির্ভর করে।
৩। কনস্ট্রাকশন খরচ
বাড়িতে সাধারণত বিল্ডিং কন্সট্রাকশনের খরচ বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত প্রতি স্কয়ার ফুট কনস্ট্রাকশনের খরচ ১৫০$ থেকে ৪০০$ হতে পারে।
৪। অন্যান্য খরচ
দুবাইতে জমি কেনা যাবে কি?
দুবাইতে জমি কেনার জন্য কিছু পদক্ষেপ মানতে হয়ঃ
১। পরিকল্পনা
২। জমি পছন্দ
৩। রিয়েল এস্টেট এজেন্ট এবং ব্রোকার নিয়োগ
৪। প্রাথমিক চুক্তি
জমি কেনার সময় জমি বিক্রেতার সাথে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে সই করুন। যেখানে জমির দাম,অর্থ পরিশোধের সময় এবং অন্যান্য শর্তাবলী উল্লেখ থাকবে। যখন আপনি প্রাথমিক চুক্তিতে সই করবেন তখন অবশ্যই একটি ডিপোজিট প্রদান করতে হবে (সাধারণত ১০%)
৫। নিরীক্ষা এবং জমির মূল্যায়ন
জমিটি কেনার আগে অবশ্যই ভালোভাবে মূল্যায়ন করে নিবেন।পরবর্তীতে কোন বাধা বা সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়।
৬। চূড়ান্ত চুক্তিতে সই
জমি সম্পর্কে ও সমস্ত শর্তাবলী পূরণ করার পরে চূড়ান্ত চুক্তিতে সই করতে হবে এবং পুরো টাকা পরিশোধ করতে হবে।
৭। নিবন্ধন
দুবাই ভূমি বিভাগের জমির নিবন্ধন করুন এবং নিজের নামে মালিকানা করুন। এই নিবন্ধনের সময় কিছু টাকা ফি দিতে হবে। এগুলো জমি কেনার সাধারণ কিছু শর্ত।
এছাড়াও প্রয়োজনের ভিত্তিতে কিছু কাগজপত্র যোগ হতে পারে। এজন্য একজন আইনজীবী অথবা রিয়েল এস্টেট এর পরামর্শ নিতে পারেন। দুবাইতে জমি কেনা যাবে কি? জেনে নিলেন দুবাই নাকি আবুধাবিতে সম্পত্তি কেনা ভালো? তা জানা যাক চলুন।
দুবাই নাকি আবুধাবিতে সম্পত্তি কেনা ভালো?
আপনার উদ্দেশ্য এবং জীবনযাপনের উপর নির্ভর করে জমি কেনা ভালো। আপনি ঠিক কি কারনে জমিটি ক্রয় করতে চান তার ওপর নির্ভর করবে আপনি কোন জায়গাতে সম্পত্তি ক্রয় করবেন।
দুবাই এবং আবুধাবি উভয় সংযুক্ত আবির আমিরাতের প্রধান শহর এবং দুই শহরেরই নির্দিষ্ট কিছু সুযোগ সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখন আপনি আপনার সুবিধা অনুযায়ী সম্পত্তি ক্রয় করতে পারেন।
দুবাই
উন্নত অবকাঠামোঃ দুবাইতে অনেক উন্নত আবাসন এবং অবকাঠামো রয়েছে।
পর্যটন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রঃ দুবাই এ বিশ্বের মধ্যে খুব সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্র রয়েছে।বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় শহর।
উচ্চ রিটার্ন এবং ইনভেস্টমেন্টঃ যদি আপনি এই শহরে অর্থ ইনভেস্ট করেন হলে পরবর্তীতে সেটি পরিবর্তন হয়ে উচ্চ রিটার্নের সাথে ফেরত পাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
উন্নত জীবনযাপন, বাণিজ্যিক সুবিধা, উচ্চ রিটার্ন এবং ইনভেস্টমেন্টে জন্য আপনি দুবাই শহরটি বেছে নিতে পারেন।
আবুধাবি
শান্তিপূর্ণ এলাকাঃ আবুধাবি অন্যান্য শহরের তুলনায় বেশ শান্তিপূর্ণ এবং বসবাসের উপযোগী একটি এলাকা।
স্থিতিশীল বাজারঃ এখানে রয়েছে স্থিতিশীল বাজার এবং এখানে বিনিয়োগের কম ঝুঁকি রয়েছে।
সরকারি সংস্থার নিকটঃ যেহেতু এই শহরটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী সেহেতু এখানে অনেক সরকারি সংস্থা রয়েছে।
একটি শান্তিপূর্ণ এলাকা, স্থিতিশীল বাজার এবং এবং সরকারি কাজের সুবিধার জন্য যদি বসবাস করতে চান তাহলে আবুধাবি একটি উপযুক্ত স্থান।
অর্থাৎ বলা যেতে পারে আপনি যদি উচ্চ রিটার্ন এবং ইনভেসমেন্ট, বাজেট এবং বিনিয়োগের জন্য কোন সম্পত্তি খোঁজেন তাহলে দুবাই আপনার জন্য সঠিক হবে।
আপনি যদি চান একটি শান্তিপূর্ণ এলাকা স্থিতিশীল বাজার কোন বিবাদ বিহীন একটি এলাকা তাহলে আবুধাবি হবে আপনার জন্য পারফেক্ট একটি স্থান।
এখন আপনি আপনার সুবিধা অনুযায়ী দুবাই অথবা আবুধাবিতে সম্পত্তি ক্রয় করতে পারেন। দুবাই নাকি আবুধাবিতে সম্পত্তি কেনা ভালো এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন আমার মনে হয় এইবার দুবাই কি থাকার জন্য ভালো তা জেনে নিন।
দুবাই কি থাকার জন্য ভালো?
দুবাই আধুনিক অবকাঠামো স্বাস্থ্য সেবা এবং উন্নত শিক্ষা দিয়ে থাকে।
২। কর্মসংস্থানের সুযোগ
দুবাইতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যেমনঃ পর্যটন, প্রযুক্তি, বিশেষ করে ব্যবসা ক্ষেত্রে।
৩। সংস্কৃতিক বৈচিত্র্য
যেহেতু দুবাইতে বিভিন্ন দেশের মানুষ একসাথে বসবাস করে যেহেতু এই দেশের সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্য এবং ভিন্নতা দেখা যায়।
৪। নিরাপত্তা
দুবাইয়ের নিরাপত্তা খুবই উন্নত। যা সেখানে থাকার প্রধান কারণ হতে পারে।
আবার দুবাইতে বসবাসের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমনঃ
১। উন্নত জীবন যাপনের খরচ
দুবাই শহরে আবাসন,শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা এবং অন্যান্য অবকাঠামের জন্য প্রচুর খরচ করতে হয়।
২। গরম আবহাওয়া
তুলনামূলক দুবাইতে গ্রীষ্মকালের আবহাওয়া প্রচন্ড পরিমাণে গরম থাকে।
৩। সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতা
কিছু সংস্কৃতিক এবং আইনি নিয়ম কানুন এর সাথে মানিয়ে চলতে কিছু সময় লাগতে পারে।
৪। স্থায়িত্বের সীমাবদ্ধতা
জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url