২০২৫ সালে সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি
সৌদি আরবে কিভাবে চাকরি পাওয়া যাবে সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং সকল কাজ সম্পরর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি
এই আর্টিকেলে। চলুন তাহলে সৌদি আরবের বিভিন্ন কাজ সম্পরর্কে জানা যাক।
সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি ও সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা। |
সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি ও সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা জানার
সাথে ওয়েল্ডিং,ওয়ার্ক শপের, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি কাজ সম্পরর্কে
জানবেন। এছাড়াও সৌদি আরবে কিভাবে চাকরি পাওয়া যাবে তাও জানবেন।
সূচিপত্রঃ সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি ও সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা।
- সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি
- সৌদি আরবে ওয়েল্ডিং কাজ
- সৌদি আরবে ওয়ার্ক শপের কাজ
- সৌদি আরবে অটোমোবাইল মেকানিক কাজ
- সৌদি আরবে কিভাবে চাকরি পাওয়া যাবে
- সৌদি আরবে এসি মেকানিক কাজ
- সৌদি আরবে ইলেকট্রিশিয়ান কাজ
- সৌদি আরবের রেস্টুরেন্ট এর কাজ
- সৌদি আরবে প্লাম্বার ভিসা
- সৌদি আরবে কনস্ট্রাকশন কাজ
- সৌদি আরবে ফ্যাক্টরি শ্রমিক
- সৌদি আরবে ক্লিনার কাজ
- সৌদি আরবে গৃহকর্মী কাজ
- সৌদি আরবে উচ্চদক্ষতার কাজের চাহিদা
- সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি
সৌদি আরবে বিভিন্ন খাতে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা ও বেতন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে
কিছু পেশার তালিকা দেওয়া হলো, যেগুলোর চাহিদা ও বেতন তুলনামূলকভাবে বেশিঃ
* ইলেকট্রিশিয়ান (Electrician): মাসিক বেতন প্রায় ১,৩৫০ থেকে ১,৫০০ রিয়াল।
* প্লাম্বার (Plumber): মাসিক বেতন প্রায় ১,৫০০ থেকে ২,০০০ রিয়াল।
* অটোমোবাইল টেকনিশিয়ান: মাসিক বেতন প্রায় ১,৫০০ থেকে ১,৮০০ রিয়াল।
* ওয়েল্ডিং শ্রমিক: মাসিক বেতন প্রায় ১,২০০ থেকে ১,৬০০ রিয়াল।
* কনস্ট্রাকশন শ্রমিক: মাসিক বেতন প্রায় ১,২০০ থেকে ১,৫০০ রিয়াল।
* ফ্যাক্টরি শ্রমিক: মাসিক বেতন প্রায় ১,৫০০ থেকে ২,০০০ রিয়াল।
* কোম্পানি ভিসা: মাসিক বেতন প্রায় ২,০০০ থেকে ৩,০০০ রিয়াল।
এছাড়া, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, গ্রাহক সেবা, অফিস
ম্যানেজার, এবং ফার্মাসিস্ট পেশাগুলোরও চাহিদা ও বেতন তুলনামূলকভাবে বেশি। সৌদি
আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি তা ভালোভাবে বোঝার জন্য নিচের তথ্যগুলো পড়ুন।
সৌদি আরবে ওয়েল্ডিং কাজ
সৌদি আরবে ওয়েল্ডিং কাজ একটি চাহিদাসম্পন্ন পেশা, যেখানে নির্মাণ শিল্প এবং
তেল-গ্যাস খাতে অভিজ্ঞ ও দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন হয়। ওয়েল্ডিং পেশায় কাজ করতে হলে
আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।
যোগ্যতা ও দক্ষতাঃ
১। প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেটঃ
* ওয়েল্ডিং এর উপর প্রফেশনাল প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
* আন্তর্জাতিক মানের সার্টিফিকেট যেমন AWS (American Welding Society), CSWIP
ইত্যাদি থাকলে সুবিধা হয়।
২। দক্ষতাঃ
* বিভিন্ন ধরণের ওয়েল্ডিং যেমন MIG, TIG, ARC, বা পাইপ ওয়েল্ডিং-এ দক্ষতা।
* ব্লুপ্রিন্ট বা টেকনিক্যাল ড্রইং বুঝতে পারা।
৩। ভাষাঃ
* মৌলিক আরবি বা ইংরেজি ভাষার জ্ঞান থাকলে কাজ পেতে সহজ হয়।
৪। শারীরিক ফিটনেসঃ
* ওয়েল্ডিং কাজের জন্য শারীরিকভাবে সুস্থ এবং শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন।
বেতন কাঠামোঃ
সৌদি আরবে ওয়েল্ডিং কাজের বেতন আপনার অভিজ্ঞতা, কোম্পানির ধরন এবং কাজের ধরণ
অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। সাধারণত প্রতি মাসে ১,২০০ থেকে ৩,৫০০ সৌদি রিয়াল (SAR) বা
তার বেশি পাওয়া যায়।
কাজের ক্ষেত্রঃ
* তেল ও গ্যাস কোম্পানি
* নির্মাণ শিল্প
* কারখানা এবং মেরামত কেন্দ্র
* জাহাজ নির্মাণ শিল্প
কিভাবে আবেদন করবেনঃ
১। কাজের বিজ্ঞাপন অনুসন্ধান করুনঃ
সৌদি আরবের জনপ্রিয় চাকরির ওয়েবসাইট যেমন Bayt.com, NaukriGulf.com বা সরাসরি
কোম্পানির ওয়েবসাইটে চাকরির বিজ্ঞাপন খুঁজুন।
২। এজেন্সির মাধ্যমেঃ
বাংলাদেশে লাইসেন্সধারী রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। BMET
(Bureau of Manpower, Employment, and Training)-এর তালিকাভুক্ত এজেন্সি ব্যবহার
করুন।
৩। ভিসা ও অনুমতিঃ
সঠিক ওয়ার্ক ভিসা এবং কোম্পানির থেকে অফার লেটার নিশ্চিত করুন।ম
সৌদি আরবে ওয়েল্ডিং কাজ সম্পরর্কে জানলেন ওয়ার্ক শপের কাজ সম্পরর্কে জানুন
এখন।
সৌদি আরবে ওয়ার্ক শপের কাজ
সৌদি আরবে ওয়ার্কশপে কাজ করতে চাইলে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরিঃ
১। কাজের ধরণঃ
সৌদি আরবে সাধারণত ওয়ার্কশপের কাজের মধ্যে গাড়ি মেরামত, ইলেকট্রিক্যাল কাজ,
ওয়েল্ডিং, কাঠের কাজ, এবং মেশিন অপারেটিং অন্তর্ভুক্ত থাকে। আপনি যে কাজ করতে
চান, তার দক্ষতা থাকা জরুরি।
২। ভিসাঃ
ওয়ার্কশপের কাজের জন্য সাধারণত ওয়ার্ক ভিসা প্রয়োজন হয়। নিয়োগকর্তার মাধ্যমে এই
ভিসার ব্যবস্থা করতে হয়।
৩। যোগ্যতাঃ
* প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা।
* কাজের নিরাপত্তা সম্পর্কিত জ্ঞান।
* ইংরেজি বা আরবি ভাষার বেসিক দক্ষতা (যদিও বাংলা জানা কর্মীও অনেক সময় নেওয়া
হয়)।
৪। বেতনঃ
ওয়ার্কশপে কাজের বেতন নির্ভর করে কাজের ধরণ, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর। প্রাথমিক
পর্যায়ে মাসিক বেতন সাধারণত ১,২০০-২,৫০০ সৌদি রিয়ালের মধ্যে হতে পারে।
৫। কাজের সময়ঃ
প্রতি সপ্তাহে ৬ দিন কাজ, ৮-১০ ঘণ্টা ডিউটি সাধারণ।
৬। কোথায় আবেদন করবেন?
* সৌদি আরবের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে কাজের জন্য স্থানীয় এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করা
যেতে পারে।
* অনলাইনে প্ল্যাটফর্ম (যেমন: Bayt, Naukrigulf) ব্যবহার করে সরাসরি নিয়োগকর্তার
সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
৭। এজেন্সি নির্বাচনঃ
বিশ্বস্ত রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির মাধ্যমে কাজের জন্য আবেদন করুন। এজেন্সি সম্পর্কে
আগে থেকে যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি আরবে ওয়ার্ক শপের কাজ সম্পর্কে জেনে
নিলেন এইবার অটোমোবাইল মেকানিক কাজ সম্পর্কে জানাবো চলুন।
সৌদি আরবে অটোমোবাইল মেকানিক কাজ
সৌদি আরবে অটোমোবাইল মেকানিক হিসাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং
পদক্ষেপগুলো নিম্নরূপঃ
যোগ্যতা ও দক্ষতাঃ
১। শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
সাধারণত অটোমোবাইল মেকানিক পদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক বা পলিটেকনিক থেকে
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকা প্রয়োজন।
২। কারিগরি দক্ষতাঃ
* ইঞ্জিন, ট্রান্সমিশন, ব্রেক সিস্টেম, এবং বৈদ্যুতিক কাজের অভিজ্ঞতা।
* অটোমোবাইল ডায়াগনস্টিক টুলস ব্যবহার করার দক্ষতা।
৩। ভাষার দক্ষতাঃ
* ইংরেজি ও আরবি ভাষার মৌলিক জ্ঞান থাকলে অগ্রাধিকার পাওয়া যায়।
কাজের ধরণঃ
১। অটোমোবাইল রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামত।
২। ইঞ্জিন টিউনিং এবং ত্রুটি নির্ণয়।
৩। গাড়ির পার্টস প্রতিস্থাপন এবং মান যাচাই।
বেতনঃ
সৌদি আরবে অটোমোবাইল মেকানিকদের গড় বেতন সাধারণত SAR 1,500 থেকে 4,000 পর্যন্ত
হতে পারে। অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে বেতন বৃদ্ধি পায়। সৌদি আরবে অটোমোবাইল
মেকানিক কাজ নিয়ে আলোচনা করলাম এইবার এইবার জেনে নিন কিভাবে চাকরি পাওয়া
যাবে।
সৌদি আরবে কিভাবে চাকরি পাওয়া যাবে
১। অনলাইন পোর্টালঃ
* Bayt, Naukri Gulf, এবং Linkedin এ নিয়মিত চাকরির বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়।
২। এজেন্সির মাধ্যমেঃ
* সৌদি আরবের বিভিন্ন বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন।
৩। স্থানীয় যোগাযোগঃ
* সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে যোগাযোগ করে স্থানীয় কাজের সুযোগ সম্পর্কে
জানা।
ভিসার প্রক্রিয়াঃ
১। সৌদি স্পন্সরের মাধ্যমে ওয়ার্ক ভিসার আবেদন।
২। মেডিকেল পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (পাসপোর্ট, চাকরির চুক্তিপত্র,
ইত্যাদি) জমা দিতে হবে।
অন্যান্য সুবিধাঃ
* আবাসন এবং যাতায়াত খরচ সাধারণত কোম্পানি বহন করে।
* ওভারটাইম সুবিধা পাওয়া যায়।
মনোযোগঃ
চাকরির জন্য কোনো ভুয়া এজেন্সির ফাঁদে পড়বেন না। কাজ পাওয়ার আগে চুক্তি
ভালোভাবে যাচাই করুন। সৌদি আরবে কিভাবে চাকরি পাওয়া যাবে বুঝতে পারলেন নিশ্চয়
এখন এসি মেকানিক কাজ
এর কাজ সম্পরর্কে জানুন।
সৌদি আরবে এসি মেকানিক কাজ
সৌদি আরবে এসি মেকানিক হিসেবে কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলোঃ
১। যোগ্যতা ও দক্ষতা
* প্রযুক্তিগত দক্ষতাঃ এসি ইনস্টলেশন, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত এবং সমস্যার
সমাধানে অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি।
* শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ টেকনিক্যাল স্কুল বা পলিটেকনিক থেকে HVAC (Heating,
Ventilation, and Air Conditioning) সম্পর্কিত ডিপ্লোমা।
* কর্ম অভিজ্ঞতাঃ পূর্বে এসি মেকানিক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তা কাজে
লাগবে।
২। ভাষা দক্ষতা
ইংরেজি বা আরবি ভাষায় মৌলিক যোগাযোেগ দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি কাজের
পরিবেশে প্রয়োজন হতে পারে।
৩। সৌদি আরবে এসি মেকানিক পদের চাহিদা
* সৌদি আরবের নির্মাণ খাত এবং রক্ষণাবেক্ষণ শিল্পে এসি মেকানিকদের ব্যাপক চাহিদা
রয়েছে।
* বাসাবাড়ি, অফিস, শপিং মল এবং শিল্প কারখানায় এসি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য
দক্ষ কর্মীদের প্রয়োজন।
৪। কাজের ধরণ
* ইনস্টলেশনঃ এসি ইউনিট স্থাপন এবং নতুন সিস্টেম সেটআপ।
* রক্ষণাবেক্ষণঃ এসি পরিষ্কার করা, ফিল্টার বদলানো এবং নিয়মিত সার্ভিসিং।
* মেরামতঃ কম্প্রেসর, কুলিং সিস্টেম, ইলেকট্রিক্যাল ইস্যু ঠিক করা।
* ডায়াগনস্টিক টেস্টিংঃ সমস্যা শনাক্ত করা এবং সমাধান প্রদান।
৫। চাকরি পাওয়ার উপায়
ক. বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি
* বাংলাদেশ থেকে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কাজ পেতে পারেন।
* BMET অনুমোদিত এজেন্সি তালিকা দেখুন: BMET ওয়েবসাইট।
খ. সরাসরি নিয়োগকর্তা
* সৌদি আরবের কোম্পানিগুলো অনলাইন জব পোর্টালের মাধ্যমে সরাসরি কর্মী খোঁজে।
* আপনার দক্ষতার একটি পেশাদার সিভি তৈরি করুন এবং বিভিন্ন পোর্টালে জমা দিন।
গ. পরিচিত সূত্র
* সৌদি আরবে বসবাসরত পরিচিত কেউ থাকলে তাদের সাহায্য নিতে পারেন।
৬। বেতন কাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা
বেতনঃ
সাধারণত ১২০০ থেকে ৩০০০ সৌদি রিয়াল (বিশেষ দক্ষতার জন্য বেশি হতে পারে)।
সুবিধাঃ
- বাসস্থান
- স্বাস্থ্যবীমা
- বছরে একবার ছুটি (টিকিটসহ)
সৌদি আরবে ইলেকট্রিশিয়ান কাজ
সৌদি আরবে ইলেকট্রিশিয়ান কাজের ব্যাপারে তথ্য পেতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো
বিবেচনা করতে পারেনঃ
১। কাজের প্রকারভেদ
সৌদি আরবে ইলেকট্রিশিয়ানদের জন্য কাজের বিভিন্ন ধরণ রয়েছে, যেমনঃ
* বাসা-বাড়ির ইলেকট্রিক্যাল কাজ
* শিল্প কারখানার ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স
* কনস্ট্রাকশন সাইটে ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন
* ইলেকট্রিক্যাল মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ
২। যোগ্যতা ও দক্ষতা
* ইলেকট্রিক্যাল কাজের জন্য অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি।
* টেকনিক্যাল ট্রেনিং বা ডিপ্লোমা কোর্স করা থাকলে অগ্রাধিকার পাবেন।
* বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও সেফটি নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
* ইংরেজি বা আরবি ভাষায় যোগাযোগ করতে পারা সুবিধাজনক।
৩। বেতন ও সুবিধা
সৌদি আরবে ইলেকট্রিশিয়ানদের বেতন সাধারণত অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে।
* মাসিক বেতনঃ ১২০০ থেকে ৩৫০০ সৌদি রিয়াল বা তার বেশি হতে পারে।
* অন্যান্য সুবিধাঃ ফ্রি থাকা, খাওয়া, বিমা, এবং ওভারটাইম।
সৌদি আরবে ইলেকট্রিশিয়ান কাজ জেনে নিলেন এখন রেস্টুরেন্ট এর কাজ সম্পরর্কে
জেনে নিন।
সৌদি আরবের রেস্টুরেন্ট এর কাজ
সৌদি আরবে রেস্টুরেন্টের কাজ বেশ জনপ্রিয় এবং বিভিন্ন ধরণের সুযোগ-সুবিধা সহ
পাওয়া যায়। এই ধরনের চাকরির মধ্যে সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট কাজের ভূমিকা
অন্তর্ভুক্ত থাকে, যেমন:
রেস্টুরেন্টে কাজের ধরণঃ
১। ওয়েটার/ওয়েট্রেসঃ অর্ডার নেওয়া এবং খাবার পরিবেশন করা।
২। ক্যাশিয়ারঃ বিল তৈরি ও পরিশোধের দায়িত্ব।
৩। কুক/শেফঃ রান্না ও খাবার প্রস্তুত করা।
৪। ক্লিনার/ডিশওয়াশারঃ রেস্টুরেন্ট পরিষ্কার ও বাসন ধোয়ার কাজ।
৫। ডেলিভারি ড্রাইভারঃ গ্রাহকদের কাছে খাবার সরবরাহ করা।
৬। ম্যানেজার/সুপারভাইজারঃ রেস্টুরেন্ট পরিচালনা এবং কর্মীদের তদারকি।
প্রয়োজনীয় যোগ্যতাঃ
* ভাষার দক্ষতাঃ সাধারণত আরবি বা ইংরেজি জানা দরকার।
* অভিজ্ঞতাঃ কিছু ক্ষেত্রে পূর্ব অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হতে পারে।
* কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্যঃ দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করার মানসিকতা।
সুবিধাঃ
* মাসিক বেতন (১,৫০০-৩,৫০০ সৌদি রিয়ালের মধ্যে হতে পারে)।
* থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা।
* ওভারটাইম সুবিধা।
* স্বাস্থ্য বীমা ও অন্যান্য সুযোগ।
সৌদি আরবের রেস্টুরেন্ট এর কাজ সম্পর্কে পড়লেন প্লাম্বার ভিসার কাজ সম্পর্কে
এখন পড়া যাক চলুন।
সৌদি আরবে প্লাম্বার ভিসা
সৌদি আরবে প্লাম্বার হিসেবে কাজ করতে চাইলে, সাধারণত কোম্পানির স্পন্সরশিপে
কর্মসংস্থান ভিসা পেতে হয়। সৌদি আরবের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে
প্লাম্বারসহ অন্যান্য টেকনিক্যাল পেশার কর্মী নিয়োেগ করে থাকে।
সৌদি আরবে প্লাম্বার ভিসা পেতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
১। কাজ খুঁজে পাওয়া
(ক) কোম্পানি বা এজেন্সির মাধ্যমেঃ
* সৌদি আরবের বিভিন্ন কোম্পানি বা নিয়োগ সংস্থা বাংলাদেশ থেকে প্লাম্বার নিয়োগ
করে।
* বাংলাদেশি এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে এ কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন।
(খ) সরাসরি যোগাযোগঃ
* সৌদি আরবের কোম্পানির ওয়েবসাইটে আবেদন জমা দিন।
* LinkedIn বা অন্যান্য জব পোর্টালের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
২। নথি প্রস্তুত
ভিসার জন্য নিচের নথি প্রয়োজনঃ
- পাসপোর্ট: বৈধতা কমপক্ষে ৬ মাস।
- ছবি: পাসপোর্ট সাইজ (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)।
- মেডিকেল রিপোর্ট: অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টার থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করুন।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট: অপরাধমুক্ত থাকার প্রমাণ।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণ সনদ: যদি প্রাসঙ্গিক হয়।
- চুক্তিপত্র: নিয়োগকর্তার সাথে চুক্তি স্বাক্ষর।
৩। ভিসা প্রসেসিং
(ক) ভিসার ধরনঃ
* "ওয়ার্ক ভিসা" বা "ইকামা ভিসা" (কাজের অনুমোদন)।
(খ) স্পন্সরশিপ প্রক্রিয়াঃ
* সৌদি কোম্পানি স্পন্সর হিসেবে কাজ করবে এবং আপনার ভিসার আবেদন দাখিল করবে।
* নিয়োগকর্তা সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নেবে।
(গ) ভিসা ফিঃ
* এজেন্সি বা কোম্পানির মাধ্যমে ভিসা ফি জমা দিতে হতে পারে।
* কিছু ক্ষেত্রে ভিসা ফি কোম্পানি বহন করে।
৪। ইন্টারভিউ ও স্কিল টেস্ট
* অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি ইন্টারভিউ নেওয়া হয়।
আপনার কাজের দক্ষতা যাচাই করার জন্য স্কিল টেস্ট দেওয়া হতে পারে।
৫। ভিসা সংগ্রহ
* ভিসা অনুমোদনের পর, পাসপোর্টে স্ট্যাম্প করা হবে।
* ইমিগ্রেশন পদ্ধতি সম্পন্ন করার জন্য এজেন্সি বা কোম্পানি নির্দেশনা দেবে।
৬। যাত্রার প্রস্তুতি
* ফ্লাইট বুক করুন (অনেক সময় কোম্পানি এই ব্যবস্থা করে)।
* প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও কাগজপত্র সঙ্গে রাখুন।
সৌদি আরবে প্লাম্বার ভিসা নিয়ে আলোচনা করলাম ড্রাইভিং ভিসা সম্পরর্কে এইবার
আলোচনা করা যাক চলুন।
সৌদি আরবে ড্রাইভিং ভিসা
সৌদি আরবে ড্রাইভিং ভিসা পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিচে এই
প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলোঃ
১। প্রাথমিক যোগ্যতাঃ
* বয়স: সাধারণত ২১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হয়।
* শিক্ষাগত যোগ্যতা: কমপক্ষে এসএসসি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন।
* ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা: বাংলাদেশে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং কমপক্ষে ২
বছরের ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
২। প্রয়োজনীয় নথিপত্রঃ
* বৈধ পাসপোর্ট
* বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স
* পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
* শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
* চিকিৎসা সনদ (মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট)
৩। ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াঃ
* নিয়োগকর্তার সন্ধানঃ সৌদি আরবে একটি নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি খুঁজে বের
করতে হবে যারা ড্রাইভার নিয়োগ দিচ্ছে।
* চাকরির প্রস্তাবপত্র: নিয়োগকর্তার কাছ থেকে একটি চাকরির প্রস্তাবপত্র
(জব অফার লেটার) সংগ্রহ করতে হবে।
* ভিসা প্রসেসিং: নিয়োগকর্তা সৌদি আরব থেকে ভিসা প্রসেসিং শুরু করবে এবং
প্রয়োজনীয় নথিপত্র বাংলাদেশে প্রেরণ করবে।
৪। মেডিকেল পরীক্ষাঃ
* স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা, চোখ
পরীক্ষা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাতে হবে।
৫। ভিসা স্ট্যাম্পিংঃ
* সৌদি দূতাবাস বা কনসুলেটের মাধ্যমে পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্প করতে হবে।
৬। প্রশিক্ষণ ও ড্রাইভিং লাইসেন্সঃ
* সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর স্থানীয় ড্রাইভিং স্কুলে ভর্তি হয়ে সৌদি ড্রাইভিং
নিয়মাবলী শিখতে হবে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হবে।
বেতন কাঠামোঃ
* কোম্পানি ড্রাইভার: প্রথম অবস্থায় মাসিক বেতন প্রায় ১,৩৭০ সৌদি রিয়াল।
* প্রাইভেট ড্রাইভার: মাসিক বেতন ১,২৫০ থেকে ১,৩৫০ সৌদি রিয়াল পর্যন্ত হতে
পারে।
* স্বাধীন ড্রাইভার: নিজস্ব গাড়ি চালিয়ে দিনে ৭-৮ ঘণ্টা কাজ করে মাসিক আয়
১,৩০০ থেকে ১,৫০০ সৌদি রিয়াল হতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
* সৌদি আরবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে নির্দিষ্ট ফি এবং প্রশিক্ষণ খরচ রয়েছে, যা
আপনার দক্ষতা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।
* সৌদি আরবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে কম্পিউটার ভিত্তিক পরীক্ষা দিতে হয়, যেখানে
ট্রাফিক সিগন্যাল এবং নিয়ম সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
সৌদি আরবে ড্রাইভিং ভিসা সম্পর্কে আশাকরি বুঝতে পারলেন এখন কনস্ট্রাকশন কাজ
সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক তাহলে।
সৌদি আরবে কনস্ট্রাকশন কাজ
সৌদি আরবে কনস্ট্রাকশন কাজের সুযোগ বেশ ভালো, বিশেষ করে দক্ষ শ্রমিক এবং
ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য। দেশটিতে মেগা-প্রকল্পগুলো যেমন নিওম সিটি, রেড সি প্রজেক্ট,
কিং আব্দুল্লাহ ইকোনমিক সিটি ইত্যাদির মাধ্যমে কনস্ট্রাকশন খাতে ব্যাপক চাহিদা
রয়েছে।
কাজের ধরণঃ
১। মেসন ও টাইলস ওয়ার্কার: বিল্ডিং তৈরিতে ব্লক, টাইলস বা ইটের কাজ।
২। ইলেকট্রিশিয়ান: নির্মাণাধীন ভবনে ইলেকট্রিক কাজ।
৩। প্লাম্বার: পানি এবং গ্যাস লাইনের কাজ।
৪। কার্পেন্টার: কাঠের আসবাবপত্র তৈরি বা কাঠামো নির্মাণ।
৫। পেইন্টার: ভবনের অভ্যন্তর বা বাইরের রং করার কাজ।
৬। হেভি মেশিন অপারেটর: ক্রেন, এক্সক্যাভেটর বা বুলডোজার চালানোর কাজ।
৭। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও সাইট সুপারভাইজার: প্রকল্প তত্ত্বাবধান ও
পরিকল্পনা।
বেতন:
সৌদি আরবে কনস্ট্রাকশন শ্রমিকদের বেতন দক্ষতার উপর নির্ভর করে। সাধারণত:
* অদক্ষ শ্রমিক: ৮০০ থেকে ১২০০ সৌদি রিয়াল।
* দক্ষ শ্রমিক: ১৫০০ থেকে ৩০০০ সৌদি রিয়াল।
* প্রকৌশলী ও ম্যানেজার: ৫০০০ রিয়াল বা তার বেশি।
যোগ্যতা ও প্রয়োজনীয়তাঃ
১। দক্ষতার সার্টিফিকেট থাকলে সুবিধা হয়।
২। ফিজিক্যালি ফিট থাকা প্রয়োজন।
৩। পাসপোর্ট ও ভিসার ব্যবস্থা করা।
৪। সৌদি আরবের নিয়ম মেনে কাজ করার মানসিকতা।
কাজ পাওয়ার উপায়ঃ
১। রিক্রুটিং এজেন্সি: বাংলাদেশে লাইসেন্সধারী এজেন্সির মাধ্যমে।
২। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম: LinkedIn, Bayt, Naukrigulf ইত্যাদির মাধ্যমে।
৩। স্থানীয় কোম্পানি বা কন্ট্রাক্টর: সরাসরি যোগাযোগ করলে।
সৌদি আরবে কনস্ট্রাকশন কাজ জেনে নিয়েছেন এইবার ফ্যাক্টরি শ্রমিক এর কাজ
সম্পর্কে জানা যাক চলুন।
সৌদি আরবে ফ্যাক্টরি শ্রমিক
সৌদি আরবে ফ্যাক্টরি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চাইলে সাধারণত বিভিন্ন এজেন্সির
মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। এ ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে
হবে:
১। যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয়তাঃ
* পাসপোর্ট: বৈধ পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক।
* মেডিকেল রিপোর্ট: স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট প্রয়োজন হয়।
* দক্ষতা: কিছু কাজের জন্য বিশেষ দক্ষতা প্রয়োজন, তবে সাধারণ শ্রমিকদের
ক্ষেত্রে সাধারণ শারীরিক সক্ষমতা এবং পরিশ্রমের মানসিকতা প্রয়োজন।
* ভাষা: আরবি বা ইংরেজি ভাষায় প্রাথমিক দক্ষতা থাকলে ভালো হয়।
২। নিয়োগ প্রক্রিয়াঃ
* অফিসিয়াল রিক্রুটিং এজেন্সি: বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত এজেন্সির
মাধ্যমেই আবেদন করুন।
* চুক্তিপত্র: চাকরির শর্তাবলী এবং বেতন নিশ্চিত করতে লিখিত চুক্তিপত্র
পড়ুন।
* ভিসা প্রসেসিং: কাজের ভিসা (ওয়ার্ক ভিসা) পেতে এজেন্সি সহায়তা করবে।
৩। বেতন এবং সুবিধাঃ
* বেতন: কাজের ধরন এবং কোম্পানির ওপর নির্ভর করে। সাধারণত মাসিক বেতন ৮০০
থেকে ১২০০ সৌদি রিয়াল বা তার বেশি হতে পারে।
* অতিরিক্ত সুবিধা: থাকা, খাওয়া, এবং চিকিৎসা ফ্রি হতে পারে।
সৌদি আরবে কাজের সুযোগের তথ্য পেতে বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের
সাথে যোগাযোগ করুন বা প্রাসঙ্গিক ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। সৌদি আরবে ফ্যাক্টরি
শ্রমিক সম্পর্কে পড়ে নিয়েছেন এখন ক্লিনার কাজ সম্পর্কে জানা যাক
তাহলে।
সৌদি আরবে ক্লিনার কাজ
সৌদি আরবে ক্লিনার হিসেবে কাজ করা অনেকের জন্য একটি সাধারণ কর্মসংস্থানের সুযোগ।
তবে এই ধরনের কাজের জন্য কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত। নিচে প্রয়োজনীয় তথ্য
দেওয়া হলো:
যোগ্যতাঃ
১। শিক্ষাগত যোগ্যতা: সাধারণত ক্লিনার পদের জন্য উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা
প্রয়োজন হয় না। তবে প্রাথমিক শিক্ষা এবং আরবি বা ইংরেজি ভাষার বেসিক জ্ঞান থাকা
ভালো।
২। শারীরিক সক্ষমতা: শারীরিকভাবে ফিট এবং কঠোর পরিশ্রম করার মানসিক
প্রস্তুতি থাকতে হবে।
কাজের ধরন:
* অফিস, হাসপাতাল, বা হোটেল পরিষ্কার করা।
* আবাসিক ভবনের নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ।
* নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা বাড়ির নিয়োগকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা।
বেতনঃ
* সৌদি আরবে ক্লিনারদের গড় বেতন ১,০০০-১,৫০০ সৌদি রিয়াল (SAR) এর মধ্যে হতে পারে।
এটি কাজের স্থান, কোম্পানি এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে।
সুযোগ-সুবিধাঃ
১। থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা (অনেক কোম্পানি সরবরাহ করে)।
২। চিকিৎসা এবং বিমার সুবিধা।
৩। ভ্রমণ ব্যয় (প্রায়শ নিয়োগকর্তা বহন করে)।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
১। পাসপোর্ট (সফর বৈধতার জন্য)।
২। বৈধ ভিসা।
৩। মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৪। চুক্তিপত্র (চাকরির শর্তাবলী উল্লেখ থাকবে)।
সৌদি আরবে ক্লিনার কাজ নিয়ে আলোচনা করেছি এইবার গৃহকর্মী কাজ নিয়ে আলোচনা
করা যাক।
সৌদি আরবে গৃহকর্মী কাজ
সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে চাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা প্রয়োজন।
এটি একটি জনপ্রিয় কাজের সুযোগ, তবে এর জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম ও শর্ত মেনে চলতে
হয়।
যা জানা প্রয়োজনঃ
১। বৈধ কাজের অনুমোদন (ভিসা)ঃ
সৌদি আরবে কাজ করার জন্য বৈধ ওয়ার্ক ভিসা থাকতে হবে। গৃহকর্মীদের জন্য "ডোমেস্টিক
ওয়ার্কার ভিসা" প্রয়োজন।
২। কাজের ধরনঃ
সাধারণত গৃহকর্মীদের কাজের মধ্যে রান্না, ঘর পরিষ্কার, শিশু বা বয়স্কদের যত্ন
নেওয়া ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে।
৩। নিয়োগ সংস্থা বা এজেন্সিঃ
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে যেতে রিক্রুটিং এজেন্সির সাহায্য নিতে
হয়। সরকারি অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে যোগাযোগ করলে প্রতারণার ঝুঁকি কম থাকে।
৪। বেতনঃ
সৌদি আরবে গৃহকর্মীদের মাসিক বেতন সাধারণত ৮০০-১২০০ সৌদি রিয়াল (SAR) এর মধ্যে
থাকে। তবে এটি নিয়োগকর্তা ও কাজের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।
৫। চুক্তিঃ
সৌদি আরবে কাজ করার আগে চুক্তি (Contract) করা হয়। এতে কাজের শর্তাবলী,
কর্মঘণ্টা, বেতন, ছুটি ইত্যাদি উল্লেখ থাকে। চুক্তি ভালোভাবে পড়ে স্বাক্ষর করা
উচিত।
৬। কাজের পরিবেশঃ
গৃহকর্মীদের অনেক সময় বাসায় থাকতে হয়। কাজের পরিবেশ কেমন হবে, তা নিয়ে আগে
থেকেই স্পষ্ট ধারণা নেওয়া প্রয়োজন।
৭। সরকারি সহযোগিতাঃ
বাংলাদেশ সরকার সৌদি আরবে গৃহকর্মীদের জন্য সেফটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। কোনো
সমস্যার সম্মুখীন হলে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস বা শ্রম কল্যাণ উইংয়ের সাথে
যোগাযোগ করতে পারেন। সৌদি আরবে গৃহকর্মী কাজ সম্পকে জানালাম
এইবার উচ্চদক্ষতার কাজের চাহিদা সম্পর্কে জানাবো চলুন।
সৌদি আরবে উচ্চদক্ষতার কাজের চাহিদা
সৌদি আরবে উচ্চদক্ষতার কাজের চাহিদা ক্রমবর্ধমান, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও নির্মাণ
খাতে। নিচে কিছু উচ্চদক্ষতার কাজের তালিকা দেওয়া হলো, যেগুলোর চাহিদা ও বেতন
তুলনামূলকভাবে বেশিঃ
- ইলেকট্রিশিয়ান
- প্লাম্বার
প্লাম্বারদের চাহিদা সৌদি আরবে উল্লেখযোগ্য। দক্ষ প্লাম্বাররা মাসিক ১,৪০০ থেকে
১,৮০০ রিয়াল পর্যন্ত বেতন পান।
অটোমোবাইল মেকানিক
অটোমোবাইল মেকানিকদের চাহিদা সৌদি আরবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দক্ষ মেকানিকরা মাসিক
১,৫০০ থেকে ১,৮০০ রিয়াল পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন।
ওয়েল্ডার
ওয়েল্ডারদের চাহিদা সৌদি আরবে বেশি। দক্ষ ওয়েল্ডাররা মাসিক ১,২০০ থেকে ১,৬০০
রিয়াল পর্যন্ত বেতন পান।
টেকনিশিয়ান
বিভিন্ন প্রযুক্তিগত কাজের জন্য টেকনিশিয়ানদের চাহিদা সৌদি আরবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দক্ষ টেকনিশিয়ানরা মাসিক ১,৩০০ থেকে ১,৮০০ Blog) রিয়াল পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন।
উল্লেখিত পেশাগুলোর পাশাপাশি, নির্মাণ, ড্রাইভিং, ফ্যাক্টরি শ্রমিক, ক্লিনার এবং
গৃহকর্মী কাজেরও চাহিদা রয়েছে। তবে উচ্চ বেতন পেতে হলে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষতা
ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ।
সৌদি আরবে যাওয়ার আগে নির্দিষ্ট পেশায় দক্ষতা অর্জন এবং বিশ্বস্ত নিয়োগ সংস্থার
মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা উচিত। এতে করে আপনি উচ্চ বেতনের চাকরি
পেতে এবং কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে পারবেন। সৌদি আরবে উচ্চদক্ষতার
কাজের চাহিদা সম্পরর্কে জানলেন সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা সম্পর্কে
জেনে নিন এখন।
সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
সৌদি আরবে যাওয়ার আগে এবং সেখানে অবস্থানকালে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা
অবলম্বন করা উচিত। নিচে এ সম্পর্কিত কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হলোঃ
১। যথাযথ ভিসা ও ডকুমেন্টস নিশ্চিত করুন
* কাজ, ওমরাহ, হজ, বা ভ্রমণের জন্য সঠিক ভিসা নিশ্চিত করুন।
* পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ৬ মাস বাকি থাকতে হবে।
* স্পন্সরের তথ্য এবং ভিসার শর্তাবলী ভালোভাবে পড়ে বুঝুন।
২। আইন ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন
* সৌদি আরবের কঠোর শারিয়াহ আইন মেনে চলুন।
* পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে স্থানীয় নিয়ম অনুসরণ করুন (মহিলাদের আবায়া পরা
প্রয়োজন, পুরুষদের জন্যও শালীন পোশাক প্রয়োজন)।
* প্রকাশ্যে ধর্মীয় বা রাজনৈতিক আলোচনা এড়িয়ে চলুন।
৩। কাজের ক্ষেত্রে সতর্কতা
* বৈধ কাজের অনুমতি (ইকামা) ছাড়া কাজ করবেন না।
* চুক্তিপত্রের শর্তাবলী ভালোভাবে পড়ে বুঝুন এবং স্পন্সরের সাথে সুষ্ঠু যোগাযোগ
রাখুন।
৪। অপরাধ ও শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক থাকুন
* মাদক, অ্যালকোহল বা অন্য কোনো অবৈধ পণ্য বহন করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
* প্রকাশ্যে ধূমপান বা অশোভন আচরণ থেকে বিরত থাকুন।
* অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত হলে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
৫। স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা
ভ্রমণের আগে প্রয়োজনীয় টিকা (যেমন: হজের ক্ষেত্রে মেনিনজাইটিস টিকা) গ্রহণ করুন।
* জ্বর বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা হলে দ্রুত স্থানীয় ক্লিনিকের সাথে যোগাযোগ
করুন।
* জরুরি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ রাখুন।
৬। বাড়তি সতর্কতা
* স্পন্সর বা কফিলের অনুমতি ছাড়া চাকরি পরিবর্তন করবেন না।
* জনসমাগম বা বিক্ষোভ থেকে দূরে থাকুন।
* আপনার মূল্যবান নথি এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিরাপদে রাখুন।
সৌদি আরবে যাওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট এজেন্সি বা দূতাবাস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ
নিয়ে নিন এবং স্থানীয় নিয়মকানুন মেনে চলুন। সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে
সতর্কতা ও সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি সবই বিস্তারিত জানালাম আপনাদের।
জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url