সিঙ্গাপুরের ভাষার নাম কি

সিঙ্গাপুরের ভাষার নাম কি ও আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো এই আর্টিকেলটিতে চলুন জেনে নিন। 
সিঙ্গাপুরের ভাষার নাম কি। জানবো আমরা। janbo amra
সিঙ্গাপুরের ভাষার নাম কি।

সূচিপত্রঃ সিঙ্গাপুরের ভাষার নাম কি

সিঙ্গাপুরের ভাষার নাম কি

সিঙ্গাপুরের প্রধান ভাষাগুলি হলোঃ 

১। ইংরেজি (English)

২। মালয় (Malay) - এটি সিঙ্গাপুরের জাতীয় ভাষা।

৩। চীনা (Mandarin Chinese)

৪। তামিল (Tamil)

এই চারটি ভাষা সিঙ্গাপুরের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃত। এর মধ্যে ইংরেজি প্রশাসনিক ও ব্যবসায়িক কাজকর্মে বেশি ব্যবহৃত হয়।

সিঙ্গাপুর একটি বহুজাতিক ও বহুভাষিক দেশ। এর ভাষাগত বৈচিত্র্য সেখানকার জনগণের সাংস্কৃতিক মিশ্রণকে প্রতিফলিত করে।

সরকারি ভাষাঃ

১। ইংরেজি (English)

* প্রশাসনিক ও শিক্ষার প্রধান ভাষা।

* বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

২। মালয় (Malay)

* সিঙ্গাপুরের জাতীয় ভাষা।

* ঐতিহাসিকভাবে মালয় অঞ্চলের অংশ হওয়ার কারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ।

* জাতীয় সংগীতও মালয়ে লেখা।

৩। চীনা (Mandarin Chinese):

* চীনা বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠী, যা সিঙ্গাপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাদের মধ্যে ব্যবহৃত হয়।

* স্থানীয় চীনা উপভাষাগুলোর মধ্যে ম্যান্ডারিনকে একীভূত ভাষা হিসেবে প্রচলন করা হয়েছে।

৪। তামিল (Tamil):

* সিঙ্গাপুরে থাকা ভারতীয় জনগোষ্ঠীর তামিল সম্প্রদায়ের প্রধান ভাষা।

সিঙ্গাপুরে ভাষার বৈচিত্র্য এবং এর ব্যবহারের আরও কিছু তথ্য দেওয়া হলো :

ইংরেজি (English):

* প্রভাব: এটি সিঙ্গাপুরের প্রশাসন, আদালত, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, এবং শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান ভাষা।

* ভাষার ধরন: সিঙ্গাপুরে ব্যবহৃত ইংরেজির মধ্যে ব্রিটিশ ইংরেজির প্রভাব বেশি। তবে, স্থানীয়ভাবে "সিংলিশ" নামে পরিচিত একটি কথ্য রূপও প্রচলিত, যেখানে ইংরেজি, মালয়, চীনা ও তামিল ভাষার মিশ্রণ দেখা যায়।

মালয় (Malay):

* জাতীয় ভাষা:

* ঐতিহ্যগত গুরুত্বের কারণে এটি জাতীয় ভাষার মর্যাদা পেয়েছে।

* সরকারি অনুষ্ঠান ও সামরিক আদেশে মালয় ভাষা ব্যবহৃত হয়।

* লিপি: রোমান লিপি ব্যবহৃত হয়।

চীনা (Mandarin Chinese):

* সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা:

* সিঙ্গাপুরের প্রায় ৭৫% জনগণ চীনা বংশোদ্ভূত, তাই এটি একটি প্রধান ভাষা।

* ম্যান্ডারিনকে চীনা জনগণের মধ্যে একীভূত ভাষা হিসেবে প্রচলিত করা হয়েছে।

* ভাষাগত প্রচার: "Speak Mandarin Campaign" চালু করা হয়েছিল, যাতে হোক্কিয়েন, ক্যান্টনিজ ইত্যাদি চীনা উপভাষার বদলে ম্যান্ডারিন ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়।

তামিল :

দক্ষিণ এশিয়ার প্রভাব:

* সিঙ্গাপুরে ভারতীয় জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ তামিলনাড়ু ও শ্রীলঙ্কা থেকে আগত, যারা তামিল ভাষা ব্যবহার করে।

* এটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

* অন্য ভারতীয় ভাষা: তামিল ছাড়াও তেলেগু, মালয়ালাম এবং পাঞ্জাবি ভাষাগুলিও সংখ্যালঘু ভারতীয়দের মধ্যে প্রচলিত।

সিংলিশ (Singlish):

* এটি একটি অনানুষ্ঠানিক ভাষার রূপ, যেখানে ইংরেজির সাথে চীনা, মালয় এবং তামিল ভাষার শব্দ ও ব্যাকরণের মিশ্রণ ঘটে।

* সিঙ্গাপুরের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিশেষত জনপ্রিয়।

* সরকার সিংলিশ ব্যবহার নিরুৎসাহিত করে কারণ এটি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

অন্য ভাষা:

সিঙ্গাপুরে আরও কিছু ভাষা প্রচলিত, যেমন:

* চীনা উপভাষাগুলি: হোক্কিয়েন, ক্যান্টনিজ, হাক্কা ইত্যাদি।

* ভারতীয় ভাষাগুলি: তেলেগু, মালায়ালাম, পাঞ্জাবি ইত্যাদি।

বৈশিষ্ট্য:

সিঙ্গাপুর সরকার তাদের "বিলিঙ্গুয়াল পলিসি" (দ্বিভাষিক নীতি) অনুসরণ করে। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ইংরেজি এবং নিজ নিজ জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষা শিখতে হয়। এর ফলে সিঙ্গাপুরে ভাষার মিশ্রণ তৈরি হয়েছে। যা সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতীক।

শিক্ষা ও দ্বিভাষিক নীতি:

* দ্বিভাষিক শিক্ষা: প্রতিটি শিশুকে ইংরেজি শেখার পাশাপাশি তার জাতিগত মাতৃভাষা (মালয়, ম্যান্ডারিন, বা তামিল) শিখতে হয়।

* উদ্দেশ্য:

* ইংরেজি আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য।

* মাতৃভাষা সাংস্কৃতিক পরিচয় ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য।

ভাষার ভূমিকা:

সিঙ্গাপুরে ভাষার ব্যবহারের ধরন সমাজের বিভিন্ন স্তরে নির্ভর করে:

* ব্যবসা ও প্রশাসন: ইংরেজি।

* গৃহস্থালি ও দৈনন্দিন জীবন: মাতৃভাষা বা স্থানীয় উপভাষা।

* জাতীয় পরিচয়: মালয় ভাষা।

সিঙ্গাপুরের ভাষার বৈচিত্র্যই এর বহুজাতিক সমাজের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url