সিঙ্গাপুরে কয়টি দ্বীপ আছে
সিঙ্গাপুরে কয়টি দ্বীপ আছে তা এই আর্টিকেলে আলোচনা করবো আপনাদের সাথে, চলুন বিস্তারিত জানা যাক।
সিঙ্গাপুরে কয়টি দ্বীপ আছে। |
সূচিপত্রঃ সিঙ্গাপুরে কয়টি দ্বীপ আছে।
সিঙ্গাপুরে কয়টি দ্বীপ আছে
সিঙ্গাপুরে মূল ভূখণ্ডের পাশাপাশি প্রায় ৬৪টি দ্বীপ রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ
দ্বীপ ছোট এবং অবারিত। সিঙ্গাপুরের কিছু বিখ্যাত দ্বীপ হলঃ
১। সেন্টোসা (Sentosa)
২। পুলাউ উবিন (Pulau Ubin)
৩। পুলাউ তেকং (Pulau Tekong)
৪। পুলাউ ব্রানি (Pulau Brani)
৫। সেন্ট জনস আইল্যান্ড (St. John's Island)
৬। কুসু আইল্যান্ড (Kusu Island)
অনেক দ্বীপে পর্যটন বা সামরিক উদ্দেশ্যে উন্নয়ন করা হয়েছে, তবে কিছু দ্বীপ অক্ষত
প্রাকৃতিক অবস্থায় রয়ে গেছে।
সিঙ্গাপুরের দ্বীপগুলো মূলত ছোট আকারের এবং অনেক দ্বীপের ভূমি পুনরুদ্ধার (land
reclamation) প্রকল্পের মাধ্যমে সম্প্রসারিত হয়েছে। নিচে সিঙ্গাপুরের আরও কিছু
উল্লেখযোগ্য দ্বীপের তালিকা এবং তাদের বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলোঃ
উল্লেখযোগ্য দ্বীপসমূহঃ
১। পুলাউ সেমাকাউ (Pulau Semakau)
এটি একটি ল্যান্ডফিল দ্বীপ যা পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য
ব্যবহৃত হয়।
২। পুলাউ সেজার (Pulau Sejar)
একটি তুলনামূলকভাবে ছোট দ্বীপ, যা ঐতিহাসিকভাবে মৎস্যজীবীদের জন্য ব্যবহৃত হতো।
৩। লাজারাস আইল্যান্ড (Lazarus Island)
পরিচিত এর সুন্দর সমুদ্র সৈকতের জন্য এবং পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়।
৪। সিস্টার্স আইল্যান্ডস (Sisters' Islands)
এটি একটি সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রিজার্ভ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এবং ডাইভিং বা
স্নরকেলিংয়ের জন্য আদর্শ।
৫। পুলাউ সুদং (Pulau Sudong)
সিঙ্গাপুরের দক্ষিণে অবস্থিত এবং সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।
৬। পুলাউ পওলো বেসার (Pulau Palau Besar)
* ছোট একটি দ্বীপ যা ঐতিহ্যগত মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত হত।
৭। পুলাউ সাকেং (Pulau Sakeng)
এর ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আগে এটি একটি বস্তিবাসী দ্বীপ ছিল, যা পরবর্তীতে
পরিবেশগত গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৮। পুলাউ বুকম (Pulau Bukom)
সিঙ্গাপুরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপ, যেখানে শেল কোম্পানির তেল শোধনাগার
রয়েছে।
৯। পুলাউ জং (Pulau Jong)
ছোট এবং প্রায় অক্ষত প্রকৃতির দ্বীপ, যা জৈববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
১০। পুলাউ সেরাইবু (Pulau Seribu)
একসময় জনপ্রিয় বাসস্থান ছিল, এখন এটি পরিত্যক্ত।
১১। পুলাউ তেকং বেসার এবং কেসিল (Pulau Tekong Besar and Pulau Tekong
Kechil)
সিঙ্গাপুর সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১২। পুলাউ হান্টিং (Pulau Hantu)
ডাইভিং এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য দেখার জন্য জনপ্রিয়, বিশেষত স্থানীয়
বাসিন্দাদের মধ্যে।
১৩। পুলাউ সেনাং (Pulau Senang)
এটি একসময় একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র ছিল, যা পরে বন্ধ হয়ে যায়।
১৪। পুলাউ পাউলো হিজাউ (Pulau Pulau Hijau)
প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য পরিচিত।
১৫। পুলাউ আয়ার (Pulau Ayer)
এটি পর্যটকদের জন্য মনোরম স্থান, কিন্তু খুবই ছোট।
সিঙ্গাপুরে দ্বীপগুলোর ভূমিকা ও প্রভাব
পরিবেশগত গুরুত্বঃ সিঙ্গাপুরের কিছু দ্বীপ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য
ব্যবহৃত হয়, যেমন সিস্টার্স আইল্যান্ডস মেরিন পার্ক।
শিল্প ও অর্থনীতিঃ পুলাউ বুকম এবং পুলাউ ব্রানি দ্বীপগুলো শিল্প ও ব্যবসার জন্য
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পর্যটনঃ সেন্টোসা, লাজারাস আইল্যান্ড এবং কুসু আইল্যান্ডে প্রতি বছর লাখ লাখ
পর্যটক ভ্রমণ করেন।
সামরিক এবং নিরাপত্তাঃ পুলাউ তেকং এবং পুলাউ সুদং প্রাথমিকভাবে সামরিক
প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
সিঙ্গাপুরের দ্বীপগুলোর বৈশিষ্ট্য
ল্যান্ড রিক্লেমেশনঃ সিঙ্গাপুরের অনেক দ্বীপ একত্রিত করে বড় দ্বীপ তৈরি করা
হয়েছে।
পর্যটনঃ সেন্টোসা এবং লাজারাস দ্বীপ পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে উন্নত।
প্রাকৃতিক সংরক্ষণঃ কিছু দ্বীপ, যেমন সিস্টার্স আইল্যান্ডস, প্রাকৃতিক
বাস্তুতন্ত্র রক্ষার জন্য সংরক্ষিত।
সামরিক উদ্দেশ্যঃ পুলাউ তেকং এবং পুলাউ ব্রানি সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সিঙ্গাপুরের দ্বীপগুলো প্রকৃতি, সংস্কৃতি, এবং আধুনিক উন্নয়নের মিশ্রণকে উপস্থাপন
করে।
ইতিহাস এবং সংস্কৃতি
সিঙ্গাপুরের কিছু দ্বীপ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
উদাহরণস্বরূপঃ
সেন্টোসা (Sentosa) এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সামরিক ঘাঁটি ছিল এবং
এখন এটি একটি শীর্ষ পর্যটন গন্তব্য।
কুসু আইল্যান্ড (Kusu Island) এটি ধর্মীয় তীর্থযাত্রার জন্য বিখ্যাত।
ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্প
সিঙ্গাপুর তার অনেক ছোট দ্বীপকে সংযুক্ত করে বড় দ্বীপ তৈরি করেছে। পুলাউ সেমাকাউ
এবং পুলাউ তেকং এর উদাহরণ।
সিঙ্গাপুরের দ্বীপগুলো আধুনিক নগরায়ণ, শিল্পোন্নতি এবং পরিবেশ সংরক্ষণের
ভারসাম্যের অনন্য উদাহরণ।
জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url