ক. খ. গ. ঘ. ঙ. চ.
কানাডা থেকে আমেরিকা কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করবো আপনাদের সাথে।
![]() |
কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়। |
কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় জানার পাশাপাশি আমেরিকান ভিসার সুবিধা, যাওয়ার খরচ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইত্যাদি বিষয়সমূহ জানা যাক চলুন।
সূচিপত্রঃ কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়
- কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়
- কেন কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার ভিসা পাওয়া সহজ
- কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কি পাসপোর্ট লাগে
- আমেরিকান ভিসার সুবিধা
- কানাডা থেকে আমেরিকায় যাওয়ার কারণ
- কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কি কি লাগে
- কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে
- কানাডা থেকে অবৈধ ভাবে আমেরিকা যাওয়ার উপায়
- কানাডার ভিসা থাকলে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়
কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়
কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার জন্য কয়েকটি উপায় রয়েছে। আপনি যেটি নির্বাচন করবেন
তা আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য, বাজেট এবং সময়ের উপর নির্ভর করবে। নিচে কিছু সাধারণ
উপায় উল্লেখ করা হলোঃ
১। সড়কপথে (গাড়ি বা বাস)
গাড়ি
ক. আপনি আপনার নিজস্ব গাড়ি বা ভাড়া করা গাড়িতে সীমান্ত পার হতে পারেন।
খ. আমেরিকায় প্রবেশ করার জন্য একটি বৈধ ভিসা বা ESTA অনুমোদন থাকা প্রয়োজন।
গ. সবচেয়ে জনপ্রিয় সীমান্ত পয়েন্টগুলো হলো:
ঘ. Buffalo-Niagara Falls (Ontario থেকে নিউ ইয়র্ক)
ঙ. Detroit-Windsor Tunnel (Ontario থেকে মিশিগান)
বাস
ক. গ্রেহাউন্ড (Greyhound) বা মেগাবাস (Megabus) কোম্পানি কানাডা এবং আমেরিকার
মধ্যে সেবা প্রদান করে।
২। রেলপথে (ট্রেন)
ক. অ্যামট্র্যাক (Amtrak) ট্রেন কানাডা থেকে আমেরিকার বিভিন্ন শহরে সেবা দেয়।
খ. উদাহরণস্বরূপ, Amtrak Maple Leaf ট্রেন টরন্টো থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে যায়।
৩। আকাশপথে (বিমান)
ক. বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন কানাডার বিভিন্ন শহর থেকে আমেরিকার বড় শহরগুলোতে সরাসরি
ফ্লাইট পরিচালনা করে।
খ. টিকিট বুকিংয়ের আগে আপনার ভিসা বা ESTA অনুমোদনের শর্ত নিশ্চিত করুন।
৪। জলপথে (ফেরি বা প্রমোদতরী)
ক. কিছু শহরে ফেরি বা প্রমোদতরীর মাধ্যমে আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
খ. উদাহরণ: Victoria থেকে Seattle বা Toronto থেকে Rochester (Lake Ontario)।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ক. কানাডিয়ান পাসপোের্ট বা অন্য কোনো বৈধ পাসপোর্ট।
খ. আমেরিকায় প্রবেশের জন্য বৈধ ভিসা, ESTA, বা TN/ NAFTA ভিসা (যদি প্রযোজ্য
হয়)।
গ. COVID-19 ভ্রমণ সংক্রান্ত নীতি ও টিকা সংক্রান্ত তথ্য (যদি প্রযোজ্য হয়)।
আপনার যাত্রা পরিকল্পনা অনুযায়ী উপযুক্ত মাধ্যম বেছে নিন। কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায় জেনে নিলেন এখন জানাবো আমেরিকা যাওয়ার ভিসা পাওয়া সহজ কেন।
কেন কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার ভিসা পাওয়া সহজ
কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার ভিসা পাওয়া তুলনামূলক সহজ হওয়ার কারণগুলো হলোঃ
১। কানাডা-আমেরিকা সম্পর্ক
কানাডা ও আমেরিকা দুই দেশই ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক
সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী।
২। ভিসা আবেদনের সহজ প্রক্রিয়া
কানাডার নাগরিক এবং স্থায়ী বাসিন্দারা আমেরিকায় ভ্রমণ করার জন্য ভিসার আবেদন
প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত।
৩। কানাডার ভ্রমণ নীতি
কানাডার নাগরিকদের পাসপোর্ট আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী, এবং তাদের ভ্রমণের ইতিহাস
সাধারণত ভালো। ফলে আমেরিকায় প্রবেশের ভিসা পাওয়া সহজ হয়।
৪। নিরাপত্তা ও আস্থা
কানাডা এবং আমেরিকার মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতা উচ্চ পর্যায়ের। ফলে দুই
দেশের মধ্যে যাতায়াতের সময় নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি কম থাকে।
৫। ভৌগোলিক নৈকট্য
দুই দেশ সীমান্ত ভাগাভাগি করে। ফলে কানাডা থেকে আমেরিকায় ভ্রমণ প্রক্রিয়া সহজ।
৬। NAFTA/USMCA প্রভাব
উত্তর আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (NAFTA, পরবর্তীতে USMCA) কানাডা ও আমেরিকার
মধ্যে বাণিজ্য এবং কর্মসংস্থানের সুবিধা বৃদ্ধি করেছে, যা ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর
করেছে।
৭। প্রাক-স্ক্রিনিং সুবিধা (Pre-Clearance Facilities)
কানাডার কিছু বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-স্ক্রিনিং সুবিধা (U.S. Customs
and Border Protection Pre-Clearance) রয়েছে। এর মাধ্যমে ভিসা চেকিং এবং অভিবাসন
প্রক্রিয়া আগেই সম্পন্ন হয়, যা ভ্রমণকারীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকে সহজ করে
তোলে।
৮। কমন ভিসা ক্যাটাগরি
কানাডার বাসিন্দাদের জন্য সাধারণত ট্যুরিস্ট (B1/B2), স্টুডেন্ট (F1), এবং ওয়ার্ক
ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সরলীকৃত। কানাডায় থাকা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরাও
আমেরিকায় পড়াশোনা বা কাজের জন্য সহজে ভিসা পেয়ে থাকেন।
৯। কানাডায় উচ্চ জীবনমান
কানাডার নাগরিকদের জীবনমান, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ভালো বলে তাদের ওপর আমেরিকার অভিবাসন ব্যবস্থার আস্থা বেশি। ফলে তারা ভিসা পাওয়ার
ক্ষেত্রে কম বাধার সম্মুখীন হন।
১০। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত নীতি
দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘতম অরক্ষিত সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্ত দিয়ে ভ্রমণ এবং
ব্যবসায়িক কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে স্বাভাবিক থাকায়, আমেরিকা কানাডার নাগরিকদের
জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ রেখেছে।
১১। কম ঝুঁকি
কানাডার নাগরিকদের সাধারণত অবৈধ অভিবাসন বা আমেরিকায় থেকে যাওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
ফলে তাদের ভিসা আবেদন দ্রুত অনুমোদিত হয়।
১২। কানাডা-আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক
কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় বাণিজ্য অংশীদার। ব্যবসায়িক কাজে বা কনফারেন্সে
অংশগ্রহণের জন্য কানাডার নাগরিকদের দ্রুত ভিসা দেওয়া হয়।
১৩। পূর্ববর্তী ভ্রমণের রেকর্ড
কানাডার নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দারা যদি আগে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করে থাকেন এবং
সেই সময় নিয়ম মেনে থাকেন, তাহলে পরবর্তী ভিসা আবেদনে তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
১৪। অস্থায়ী ভিসার সুবিধা (ESTA)
কানাডার কিছু স্থায়ী বাসিন্দা (যাদের নির্দিষ্ট দেশের পাসপোর্ট রয়েছে) ভিসা
ছাড়াই আমেরিকায় ভ্রমণের অনুমতি পান, যদি তারা Visa Waiver Program (VWP)-এর
আওতায় আসেন।
১৫। সীমান্ত ক্রসিং সহজতর
সড়কপথে কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়া খুবই সহজ এবং প্রতিদিন অনেক মানুষ সীমান্ত পার
হন। এই নিয়মিত যোগাযোগের কারণে ভিসা ব্যবস্থাও সহজ রাখা হয়েছে।
কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হওয়ার মূল কারণ হলো দুই দেশের
ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, ভ্রমণ নীতির সরলতা এবং কানাডার নাগরিকদের প্রতি আমেরিকার আস্থা।
তবে, এটি ব্যক্তিগত যোগ্যতা এবং উদ্দেশ্যের ওপরও নির্ভরশীল। কেন কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার ভিসা পাওয়া সহজ জানালাম এইবার জানুন পাসপোর্ট লাগে কিনা আমেরিকা যেতে।
কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কি পাসপোর্ট লাগে
হ্যাঁ, কানাডা থেকে আমেরিকা ভ্রমণের জন্য পাসপোর্ট প্রয়োজন। তবে ভ্রমণের ধরন ও
নাগরিকত্বের উপর নির্ভর করে কিছু অতিরিক্ত নথি প্রয়োজন হতে পারে।
নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো
১। কানাডিয়ান নাগরিকদের জন্য
ক. পাসপোর্ট বা NEXUS কার্ড প্রয়োজন।
খ. বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অবশ্যই লাগবে।
গ. স্থল বা জলপথে (গাড়ি বা ফেরির মাধ্যমে) ভ্রমণ করলে NEXUS কার্ড, Enhanced
Driver's License (EDL), বা Trusted Traveler প্রোগ্রামের আওতায় অন্যান্য নথি
ব্যবহার করা যেতে পারে।
২। বাংলাদেশি বা অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জন্য
ক. বৈধ পাসপোর্ট প্রয়োজন।
খ. আমেরিকার জন্য বৈধ ভিসা থাকতে হবে (যদি আপনি ভিসামুক্ত দেশের নাগরিক না হন)।
গুরুত্বপূর্ণ
ক. সীমান্তে ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনীয় নথি
সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে হবে।
খ. NEXUS বা বিশেষ প্রোগ্রাম ছাড়া বিমানের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট ব্যতীত ভ্রমণ সম্ভব
নয়। কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কি পাসপোর্ট লাগে জেনে নিলেন এখন এই ভিসার সুবিধা জানা যাক চলুন।
আমেরিকান ভিসার সুবিধা
আমেরিকান ভিসার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন সুবিধা উপভোগ করতে পারেন, যা নির্ভর করে
ভিসার ধরন এবং উদ্দেশ্যের উপর। সাধারণত, আমেরিকান ভিসার প্রধান সুবিধাগুলো হলো:
১। পর্যটন ও ভ্রমণ
ক. বি-২ পর্যটন ভিসা আপনাকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ এবং অবকাশ কাটানোর সুযোগ দেয়।
খ. দেশটির বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র এবং সাংস্কৃতিক স্থান পরিদর্শন করতে পারবেন।
২। শিক্ষা
ক. এফ-১ (F-1) স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ।
খ.উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা ব্যবস্থা উপভোগ করতে
পারবেন।
৩। কর্মসংস্থান
ক. এইচ-১বি (H-1B) বা ওয়ার্ক ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ।
খ. বিশেষজ্ঞ বা পেশাজীবী হিসেবে কাজ করার জন্য অনেক কোম্পানি স্পন্সর করে।
৪। ব্যবসা ও বিনিয়োেগ
ক. বি-১ (B-1) ব্যবসায়িক ভিসা দিয়ে ব্যবসা সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে
পারবেন।
খ. ইবি-৫ (EB-5) ভিসার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পেতে
পারেন।
৫। স্বাস্থ্যসেবা
ক.উন্নত চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া যায়।
খ. জটিল রোগের চিকিৎসায় বিশ্বখ্যাত হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের পরামর্শ পাওয়া সম্ভব।
৬। পারিবারিক পুনর্মিলন
ক.ফ্যামিলি ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের
সুযোগ।
৭। স্থায়ী বাসস্থান
ক.গ্রিন কার্ড পাওয়ার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বসবাস এবং কাজ করার সুযোগ।
খ. নাগরিকত্ব অর্জনের পথ উন্মুক্ত হয়।
৮। ভিসার বৈচিত্র্য ও প্রকারভেদ
যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ধরণের ভিসা প্রদান করে, যা নির্ভর করে আবেদনকারীর প্রয়োজন
এবং যোগ্যতার উপর। যেমন:
ক. ট্রানজিট ভিসা (C): যুক্তরাষ্ট্রে অল্প সময়ের জন্য যাত্রাবিরতির সুযোগ।
খ. জে-১ ভিসা: এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুবিধা।
গ. এল ভিসা: মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের সুযোগ।
৯। বিশ্বের শীর্ষ স্বাস্থ্য ও গবেষণা সুবিধা
ক. যুক্তরাষ্ট্রে উন্নতমানের হাসপাতাল এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা জটিল
চিকিৎসা বা গবেষণার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য।
খ. মেডিকেল ভিসা (B-2) বিশেষত চিকিৎসার জন্য সহায়ক।
১০। পর্যটন ভিসার মাধ্যমে অন্যান্য দেশে ভ্রমণ সুবিধা
ক. যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা থাকলে অনেক দেশ (যেমন: কানাডা, মেক্সিকো, বাহামা) সহজে
ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের অনুমতি দেয়।
১১। বৈশ্বিক সংযোগের সুযোগ
ক. যুক্তরাষ্ট্রে কাজ বা পড়াশোনার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে সংযোগ
স্থাপন এবং গ্লোবাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সম্ভব।
খ. গবেষণা এবং উদ্ভাবনের জন্য নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়।
১২। উন্নতমানের জীবনযাপন
ক. যারা স্থায়ী বসবাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান (গ্রিন কার্ডধারী), তারা উন্নত
অবকাঠামো, নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
খ. যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সুবিধাগুলো, যেমন: স্বাস্থ্য বীমা, পেনশন সুবিধা
ইত্যাদি।
১৩। অর্থনৈতিক সুযোগ
ক. বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির অংশ হওয়ার সুযোগ।
খ. ব্যবসা ও চাকরির জন্য উদার পরিবেশ এবং প্রচুর সুযোগ।
১৪। নাগরিকত্বের সুবিধা
ক. গ্রিন কার্ডধারীরা নির্দিষ্ট সময় পর আমেরিকান নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে
পারেন।
খ. নাগরিকত্ব পেলে ভোটাধিকার, ফেডারেল চাকরি এবং আরও অনেক সুযোগ পাওয়া যায়।
১৫। সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা
ক. যুক্তরাষ্ট্র বহু সংস্কৃতির দেশ। সেখানে বাস করে বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে
যাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়।
খ. নতুন ভাষা শেখা এবং ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ।
যারা আমেরিকান ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তাদের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অনুযায়ী
যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। আবেদনপত্রে সঠিক তথ্য দেওয়া এবং প্রয়োজনীয়
নথিপত্র জমা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকান ভিসার সুবিধাগুলো পড়ে নিলেন এইবার আমেরিকা যাওয়ার কিছু কারনও জেনে নিন।
কানাডা থেকে আমেরিকায় যাওয়ার কারণ
কানাডা থেকে আমেরিকায় যাওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেগুলো ব্যক্তির প্রয়োজন,
পেশা, শিক্ষা, বা পারিবারিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ কারণ হতে পারে:
১। চাকরি বা ব্যবসা
ক. আমেরিকায় বড় বড় কোম্পানি এবং স্টার্টআপের সুযোগ বেশি, যা চাকরি বা ব্যবসার জন্য
আকর্ষণীয়।
খ.প্রযুক্তি, ফিনান্স, এবং মেডিকেল ক্ষেত্রে আমেরিকার বাজার বেশি উন্নত।
২। উচ্চশিক্ষা
ক. বিশ্বের সেরা কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান আমেরিকায় অবস্থিত।
খ. শিক্ষাবৃত্তি এবং গবেষণার সুযোগও বেশি।
৩। উন্নত জীবনযাত্রা
ক. আমেরিকায় বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসের সুযোগ এবং সুবিধা অনেক।
খ. অনেক সময় ব্যক্তিগত পছন্দের জন্য মানুষ স্থানান্তরিত হয়।
৪। পরিবার
ক. পরিবারকে যুক্ত করার জন্য বা পরিবারের সদস্যদের কাছে যাওয়ার জন্য অনেকে কানাডা
থেকে আমেরিকায় যায়।
৫। আবহাওয়া
ক. আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর আবহাওয়া কানাডার তুলনায় অনেক উষ্ণ, যা
অনেকের জন্য সুবিধাজনক।
৬। বড় বাজার ও সুযোগ
ক. আমেরিকার অর্থনীতি অনেক বড় এবং বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বা কাজের সুযোগ বেশি।
৭। স্বাস্থ্যসেবা ও বিশেষায়িত চিকিৎসা
ক. কিছু ক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেকে আমেরিকায় যায়।
এছাড়াও মানুষ বিভিন্ন কারণে কানাডা থেকে আমেরিকায় গিয়ে থাকেন। কানাডা থেকে আমেরিকায় যাওয়ার কারণ জানলেন এইবার জেনে নিন যেতে কি কি লাগে।
কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কি কি লাগে
কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে হলে আপনার যাত্রার উদ্দেশ্য এবং ভ্রমণের মাধ্যম অনুযায়ী
কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ও শর্ত পূরণ করতে হবে। নিচে সাধারণ তথ্য দেওয়া
হলোঃ
১। ভিসা বা অনুমতি
পর্যটন, ব্যবসা বা ছোট সময়ের ভ্রমণঃ
ক. যদি আপনি ESTA (Electronic System for Travel Authorization)-এর অধীনে আসেন এবং
ভিসা ছাড়া ভ্রমণকারী দেশের নাগরিক হন, তাহলে ভিসা প্রয়োজন নেই।
খ. অন্যথায়, B-1/B-2 পর্যটক ভিসা দরকার হতে পারে।
কর্মস্থল বা শিক্ষার্থীর জন্যঃ
ক. কর্মস্থলের জন্য H-1B বা অন্য কর্মভিসা।
খ. শিক্ষার্থীদের জন্য F-1 বা M-1 ভিসা।
২। পাসপোর্ট
আপনার বৈধ পাসপোের্ট থাকতে হবে যা যাত্রার সময় পর্যন্ত বৈধ থাকবে।
৩। যাতায়াতের মাধ্যম অনুযায়ী প্রয়োজনীয়তা
গাড়িতে গেলেঃ
ক. U.S. Customs and Border Protection (CBP) অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে
হবে।
ফ্লাইটে গেলেঃ
ক. বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে সমস্ত ডকুমেন্ট প্রদর্শন করতে হবে।
৪। COVID-19 সংক্রান্ত শর্ত
ক. বর্তমান স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো বিধি নিষেধ থাকলে তা মানতে হবে।
৫। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র
ক. আপনার রিটার্ন টিকিট (যদি পর্যটনের জন্য যান)।
খ. পর্যাপ্ত আর্থিক তথ্য প্রমাণ।
গ. আমেরিকায় অবস্থানকালীন ঠিকানা বা পরিকল্পনা।
সাধারণত কানাডা থেকে আমেরিকায় যেতে উপরে লিখিত তথ্যগুলো প্রয়োজন। কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কি কি লাগে জানালাম আপনাদের এখন জানুন কত টাকা লাগে।
কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে
কানাডা থেকে আমেরিকায় যাওয়ার খরচ অনেক বিষয়ে নির্ভর করে, যেমনঃ
১। পরিবহন মাধ্যম
ক. বিমানে গেলে টিকিটের মূল্য নির্ভর করবে গন্তব্য এবং সময়ের ওপর। সাধারণত
$200-$500 (CAD বা USD) এর মধ্যে থাকতে পারে।
খ.বাস বা ট্রেনের খরচ তুলনামূলক কম হয়, প্রায় $50-$150
২। ভিসা ফি (যদি প্রয়োজন হয়)
ক. কানাডার নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দাদের জন্য আমেরিকায় ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রয়োজন
নাও হতে পারে। তবে অন্য দেশ থেকে আসা কেউ থাকলে তাদের ভিসা ফি $185 (US B2 ভিসার
জন্য) হতে পারে।
৩। বিমান ভাড়া
ক. কানাডার বড় শহরগুলি (যেমন: টরন্টো, ভ্যাঙ্কুভার, মন্ট্রিয়াল) থেকে আমেরিকার
প্রধান শহরে বিমানের ভাড়া সাধারণত $200 থেকে $500 (CAD বা USD) হতে পারে, তবে অফ
সিজন বা সেল অফারে এটি কম হতে পারে।
খ.কিছু কম খরচের বিমান সংস্থা (যেমন: Air Canada, WestJet) সস্তা টিকিট অফার করে,
তবে প্যাকেজের মধ্যে অতিরিক্ত খরচ (যেমন ব্যাগেজ ফি) যোগ হতে পারে।
৪। বাস বা ট্রেন ভাড়া
ক. যদি আপনি বাস বা ট্রেন দিয়ে যাতায়াত করতে চান, তবে ভাড়া সাধারণত কম হয়।
খ. বাস ভাড়া (Greyhound, Megabus) প্রায় $50 থেকে $150 হতে পারে।
গ. ট্রেন (VIA Rail বা Amtrak) ভাড়া কমপক্ষে $100 থেকে শুরু হতে পারে, তবে দীর্ঘতর
ভ্রমণের জন্য ভাড়া বেশি হতে পারে।
৫। সীমান্ত পারাপার ফি
ক. কানাডা এবং আমেরিকার মধ্যে কিছু সীমান্ত পাসে টোল বা ফি থাকতে পারে। সাধারণত $5
থেকে $10 পর্যন্ত টোল ফি থাকে, তবে নির্ভর করে সীমান্ত পয়েন্টের উপর।
৬। কাস্টমস এবং সিকিউরিটি
ক. সীমান্ত পারাপারের সময় কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স এবং সিকিউরিটি চেকের জন্য কিছুটা
সময় লাগতে পারে, যার জন্য অতিরিক্ত সময় এবং কিছু ক্ষেত্রে খাবার বা পানীয়ের
খরচও বৃদ্ধি পেতে পারে।
৭। যাত্রা সম্পর্কিত অন্যান্য খরচ
ক. যদি আপনি বিমান বা বাসের মাধ্যমে আমেরিকায় যাচ্ছেন, তবে সেখানে স্থানীয়
ট্রান্সপোের্ট (ট্যাক্সি, উবার, মেট্রো) খরচও যুক্ত হবে, যা সাধারণত $10-$50 এর
মধ্যে হতে পারে।
এভাবে, পুরো যাত্রার খরচ আপনার যাত্রার পদ্ধতি, সময় এবং গন্তব্যের উপর ভিত্তি
করে পরিবর্তিত হবে। কানাডা থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে পড়ে নিলেন এইবার অবৈধভাবে যাওয়ার উপায় জেনে নিন।
কানাডা থেকে অবৈধ ভাবে আমেরিকা যাওয়ার উপায়
অনেকে কানাডা থেকে টাকা খরচের ভয়ে অবৈধভাবে আমেরিকাতে যেতে চায়। কিন্তু যদি
কোনভাবে আমেরিকার পুলিশের কাছে ধরা পড়ে তাহলে জেল ও জরিমানার পাশাপাশি শাস্তি
নিশ্চিত।
যেহেতু কানাডা ও আমেরিকা দুইটি পাশাপাশি দেশ তাই অনেকেই বৈধ পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই
আমেরিকাতে যেতে চান। এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজ।
অবৈধভাবে আমেরিকাতে যাওয়ার পরে কোনভাবে ধরা পড়ে গেলে আপনার পাসপোর্ট ভিসা বাতিল
করা হবে এবং শাস্তি দেওয়া হবে। তাই অবৈধভাবে কানাডা থেকে আমেরিকাতে না যাওয়াই
শ্রেয়।
আপনি খুব সহজেই অল্প খরচে ওয়ার্কশিপ ভিসা অথবা স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে কানাডা
থেকে আমেরিকায় যেতে পারেন।
কানাডা থেকে আমেরিকায় যাওয়ার পদ্ধতি বিস্তারিত
জানতে দেশের দূতাবাস অথবা ওয়েবসাইটের ভিজিট করতে পারেন। কানাডা থেকে অবৈধ ভাবে আমেরিকা যাওয়ার উপায় জানালাম আপনাদের এখন জানা যাক কী কী দেশে যাওয়া যাবে এই ভিসা থাকলে।
কানাডার ভিসা থাকলে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়
কানাডার ভিসা থাকলে নির্দিষ্ট কিছু দেশে ভিসা ছাড়াই বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ
করা যায়। এই দেশগুলো সাধারণত পর্যটকদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয়। নিচে কয়েকটি দেশের
তালিকা দেওয়া হলো যেখানে কানাডার ভিসা থাকলে ভিসা ছাড়াই প্রবেশ করা যায়ঃ
ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের সুযোগ
১। মেক্সিকো
২। কোস্টারিকা
৩। ডোমিনিকান রিপাবলিক
৪। জর্জিয়া
৫। বাহামাস
৬। জ্যামাইকা
৭। হন্ডুরাস
৮। পানামা
৯। কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ
অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুযোগ
১। কাতার
২। দুবাই (সংযুক্ত আরব আমিরাত)
৩। শ্রীলঙ্কা (ETA-এর মাধ্যমে)
৪। মালদ্বীপ
৫। সিশেলস
কানাডার ভিসা থাকলে আরও কিছু দেশে ভিসা ছাড়াই বা সহজ ভ্রমণ সুবিধা পাওয়া যায়।
এখানে তালিকা তুলে ধরা হলো:
উত্তর ও মধ্য আমেরিকা
১। গুয়াতেমালা
২। এল সালভাদর
৩। নিকারাগুয়া
৪। বার্বাডোস
৫। সেন্ট লুসিয়া (অন-অ্যারাইভাল ভিসা)
৬। গ্রেনাডা
৭। অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা
৮। ত্রিনিদাদ ও টোবাগো
এশিয়া
১। হংকং (১৪ দিনের জন্য)
২। দক্ষিণ কোরিয়া (ট্রানজিটের জন্য নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত)
৩। সিঙ্গাপুর (শর্ত সাপেক্ষে)
৪। ফিলিপাইনস (৩০ দিনের জন্য)
৫। তুরস্ক (ই-ভিসা সহজলভ্য)
৬। ম্যাকাও
ইউরোপ
কিছু ইউরোপীয় দেশ, যেমন:
১। জর্জিয়া (১ বছর পর্যন্ত)
২। মন্টেনেগ্রো
৩। আলবেনিয়া (সীমিত সময়ের জন্য)
মধ্যপ্রাচ্য
১। ওমান (ই-ভিসার মাধ্যমে সহজ প্রবেশ)
২। বাহরাইন (অন-অ্যারাইভাল ভিসা)
৩। কুয়েত (অন-অ্যারাইভাল ভিসা)
আফ্রিকা
১। মরক্কো
২। মাদাগাস্কার (অন-অ্যারাইভাল ভিসা)
৩। মাওরিতানিয়া
৪। তানজানিয়া
শর্তসমূহ
ক. কানাডার ভিসা থাকতে হবে বৈধ (সাধারণত ৬ মাসের বেশি মেয়াদ থাকা বাঞ্ছনীয়)।
খ. এয়ারপোর্ট ট্রানজিট বা টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে পৃথক নিয়ম থাকতে
পারে।
গুরুত্বপূর্ণ টিপস
ক. প্রতিটি দেশের নিয়ম ভিন্ন। কিছু দেশে প্রবেশ করতে কানাডার ভিসার পাশাপাশি কিছু
নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়।
খ. কানাডার ভিসার মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে।
গ. অনেক দেশে ইমিগ্রেশনে ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও অন্যান্য নথি চাওয়া হতে পারে।
আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনার আগে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস বা ওয়েবসাইটে যাচাই করে
নিন।
পরিশেষেঃ কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার উপায়
কানাডা থেকে আমেরিকা যাওয়ার বিভিন্ন উপায়সমূহ আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। এইরকম তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আমাদের সার্ভিস সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url