আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম ও আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া

আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম ও ও আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া আজকের এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে জানবো আমরা। 

আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম ও আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া। জানবো আমরা। janbo amra
আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম ও আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া
আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম ও আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া ও আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইত্যাদি বিষয়গুলো জানা যাক চলুন।

সূচিপত্রঃ আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম ও আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া

আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম

আস্তাগফিরুল্লাহ ( أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ) নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও ইস্তিগফার অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা। এটি সাধারণত মুসলমানেরা কোন গুনাহ করে থাকলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য ব্যবহার করে থাকে।

আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম

أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ - উচ্চারণ আস্তাগফিরুল্লাহ।

এর অর্থ : আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।

اسْتَغْفِرُ اللَّهَ رَبِّي مِنْ كُلِّ ذَنْبٍ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ - উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুল্লি ধাম্বিন ওয়া আতুবু ইলাইহি।

অর্থ: আমি আমার প্রতিপালক আল্লাহর কাছে সব পাপের জন্য ক্ষমা চাই এবং তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করছি।

আস্তাগফিরুল্লাহ কখন এবং কতবার পড়া উচিত

ক. নামাজের পর : ফজরের নামাজের পর তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া পাঠ করা সুন্নত।

খ. পাপ করলে : যদি কোন ভুল কাজ বা পাপ কাজ হয়ে যায় তাহলে সাথে সাথে আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করা উচিত।

গ. দোয়া ও জিকিরের সময় : সকালে বিকালে, তাহাজ্জুদ বা দোয়ার সময় ইস্তিগফার পাঠ করা যেতে পারে।

নিয়মিত ইস্তিগফার পাঠ করলে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায় এবং জীবন কল্যাণকর হয়। আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম জানালাম এখন একটি অর্থ জানা যাক চলুন।

আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু

أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ - এর অর্থ

আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া এই পৃথিবীতে আর কোন মাবুদ নেই। তিনি চিরস্থায়ী, চিরঞ্জিত এবং তার কাছে তওবা করে ফিরে আসি।

এটি আপনি দিনের যে কোন সময় ইবাদত করার সময় আল্লাহর নিকট তাওবাহ করতে পারেন। হাদিসে এসেছে- এভাবে তাওবাহ-ইসতেগফার করলে আল্লাহ তায়াআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু জেনে নিলেন এইবার ফজিলত সম্পর্কে জানা যাক চলুন। 

আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি এর ফজিলত

আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি" (أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ) এর অর্থ হলো:

" আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তার দিকে ফিরে আসি "।

এই দোয়াটি পাঠের গুরুত্ব

ক. পাপ থেকে মুক্তির জন্য

নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা তোমাদের পাপের জন্য তোমাদের প্রতিপালকের কাছে তওবা করো এবং তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নাও। কেননা আমিও প্রতিদিন ১০০ বার তওবা ও ইস্তিকাফার করি। ( সহিহ মুসলিম - ২৭০২)।

খ. রিজিক বৃদ্ধি ও বিপদ থেকে মুক্তি

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, তোমরা তোমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাও। তিনি পরম ক্ষমাশীল। দিদি তোমাদের প্রচুর ধনসম্পত্তি এবং সন্তান-সন্ততি দাঁড়া তোমাদের সাহায্য করবেন। ( সূরা নূহ - ১০-১২)।

গ. জান্নাত লাভের জন্য

রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করবে আল্লাহ তার সব সমস্যা থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করবেন এবং দুঃখ দুর্দশা থেকে তাকে উদ্ধার করবেন। তাকে রিজিক দান করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না। ( সুনান আবু দাউদ - ১৫১৮)।

আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি এই দোয়া প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করা সুন্নত।

সালাতের পর, রাতের শেষ অংশে এবং বিশেষ করে দুঃখ দুর্দশার মুহূর্তে বেশি বেশি এই দোয়া পাঠ করলে বেশি ফজিলত পাওয়া যায়।

আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি এর ফজিলত পড়ে নিলেন এখন আস্তাগফিরুল্লাহ এর আরবি জেনে নেওয়া যাক চলুন। 

আস্তাগফিরুল্লাহ আরবি

আস্তাগফিরুল্লাহ" (اسْتَغْفِرُ الله) এটি একটি আরবি বাক্যাংশ। এর অর্থ হলো, "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থী "।

এটি মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত একটি দোয়া। যা সাধারণত পাপ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা হয়ে থাকে।

এটি উচ্চারণ করা হয়: Astaghfirullah (আস্তাগফিরুল্লাহ)।

এই দোয়াটি কোরানে বা হাদীসে বারবার করে উল্লেখ করা হয়েছে। এই দোয়াটি মুসলমানদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া। আস্তাগফিরুল্লাহ আরবি জানালাম এখন জানুন আস্তাগফিরুল্লাহর ব্যবহার। 

কুরআন ও হাদিসে আস্তাগফিরুল্লাহর ব্যবহার

কুরআনে আস্তাগফিরুল্লাহর উল্লেখ

"আস্তাগফিরুল্লাহ" অর্থ "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।" কুরআনে বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা প্রার্থনার (ইস্তিগফার) প্রতি উৎসাহিত করেছেন। যেমন:

ক. সূরা নূহ (৭১:১০)

فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا - এর অর্থ

"তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল।"

খ. সূরা হূদ (১১:৩)

وَأَنِ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوا إِلَيْهِ يُمَتِّعْكُم مَّتَاعًا حَسَنًا - এর অর্থ

"আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, অতঃপর তাঁর দিকে ফিরে আসো, তাহলে তিনি তোমাদেরকে উত্তম জীবন উপভোগ করাবেন।"

গ. সূরা আল-ইমরান (৩:১৩৫)

وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوالِ ذُنُوبِهِمْ - এর অর্থ

"যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেলে বা নিজেদের প্রতি জুলুম করে, তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।"

হাদিসে আস্তাগফিরুল্লাহর ব্যবহার

হাদিসে দেখা যায়, নবী মুহাম্মদ ( সাঃ) নিজেও বারবার ইস্তিগফার করতেন এবং তার উম্মতকে ও সেটি করার জন্য উপদেশ দিয়েছেন।

ক. নবী ( সাঃ) বলেন,

" আমি নিজেও প্রতিদিন ৭০ বারের বেশি ইস্তিগফার করি। "(সহিহ বুখারি - ৬৩০৭)

খ. অন্য একটি হাদিসে আছে

" যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার করে আল্লাহ তাকে সব সংকট থেকে মুক্তি দেবেন, সব দুঃখ দূর করবে এবং অপ্রত্যাশিত রিজিক প্রদান করবেন "। (আবু দাউদ - ১৫১৮)

গ. নবী (সা.) এর শেখানো সর্বোত্তম ইস্তিগফার (সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার)

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ - সম্পূর্ণ দোয়া - (সহিহ বুখারি ৬৩০৬)

কোরআন ও হাদিস অনুসারে, আস্তাগফিরুল্লাহ বলা অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ। এই দোয়াটি আল্লাহর কাছে ক্ষমা লাভের অন্যতম মাধ্যম। 

পাশাপাশি প্রতিদিন এটি বলা মুসলিম জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কুরআন ও হাদিসে আস্তাগফিরুল্লাহর ব্যবহার ও আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম সবই জানালাম আপনাদের। 

পরিশেষেঃ আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম ও আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া

আস্তাগফিরুল্লাহ সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন আমার মনে হয়। এইরকম তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আমাদের সার্ভিস সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url