আস্তাগফিরুল্লাহ কখন পড়তে হয়
আস্তাগফিরুল্লাহ কখন পড়তে হয় আজকের এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
![]() |
আস্তাগফিরুল্লাহ কখন পড়তে হয় |
আস্তাগফিরুল্লাহ কখন পড়তে হয়
আস্তাগফিরুল্লাহ (أَسْتَغْفِرُ اللهَ)- অর্থ হলো "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই"। এটি ইস্তিগফারের (ক্ষমা প্রার্থনার) একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া, যা মুসলিমরা বিভিন্ন সময়ে পড়ে থাকেন।
আস্তাগফিরুল্লাহ কখন পড়তে হয় তার সময়সূচী :
ক. গুনাহ বা ভুল করলে :
কোন ছোট বা বড় গুনাহ বা পাপ করলে সাথে সাথে আল্লাহর কাছে " আস্তাগফিরুল্লাহ " বলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
খ. রিজিক ও বরকতের জন্য :
আল্লাহ বেশি বেশি রিজিক ও বরকত দান করেন ইস্তিগফারকারী মানুষদের।
গ. নামাজের পরে :
নামাজের পরে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়া সুন্নত।
ঘ. ঘুমানোর আগে :
রাতে ঘুমানোর আগে ইস্তিগফার করা একটি ভালো অভ্যাস।
ঙ. কোনো বিপদ বা দুশ্চিন্তায় পড়লে :
বিপদ থেকে মুক্তির জন্য অথবা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির জন্য আস্তাগফিরুল্লাহ পড়া ভালো।
চ. কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাজের সময় :
গভীর রাতে ইস্তিগফার করা আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়।
আস্তাগফিরুল্লাহ ফজিলত কি
"আস্তাগফিরুল্লাহ" (أَسْتَغْفِرُ اللهَ)অর্থ হলো "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই"। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া), যা মুসলিমরা নিজেদের গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পাঠ করে থাকেন।
আস্তাগফিরুল্লাহ ফজিলত :
ক. নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন নিয়মিত ইস্তিগফার পাঠ করবে আল্লাহ তার সকল সংকটের সমাধান করে দেবেন। ওকে তার সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন এবং অনেক বেশি বিজি প্রদান করবেন যা সে কল্পনাও করেনি। ( সুনান আবু দাউদ - ১৫১৮)।
খ. কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ক্ষমা প্রার্থনা করো তিনি পরম ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং সন্তান সন্ততি দ্বারা সমৃদ্ধ করবেন। ( সূরা নূহ - ১০-১২)।
গ. যে ব্যক্তিরা বেশি বেশি আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করে তাদের হৃদয়ের প্রশান্তি আসে, তাদের মন ও আত্মা প্রশান্ত থাকে।
ঘ. নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার পাঠ করবেন আল্লাহতালা তাকে সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করে দেবেন। ( সহিহ মুসলিম)।
ঙ. বেশি বেশি ইস্তিগফার পাঠ করলে আল্লাহর বেশি রিজিক দেন এবং জীবনের সব দুঃখ দুর্দশা থেকে মুক্তি দেন।
আস্তাগফিরুল্লাহ বলার কিছু উপায় :
ক. আস্তাগফিরুল্লাহ্ ( أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ)
খ. আস্তাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিন ওয়াতুবু ইলাইহি ( أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ رَبِّي مِنْ كُلِّ ذَنْبٍ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ)
গ. সাইয়্যিদুল ইসতিগফার :
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করলে আল্লাহর কাছাকাছি আসা যায়। এটি পাঠের মাধ্যমে গুনাহ মাফ, রিজিক বৃদ্ধি এবং দুঃখ দুর্দশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
বেশি বেশি আস্তাগফিরুল্লাহ পড়লে কি হয়
বেশি বেশি "আস্তাগফিরুল্লাহ" (أستغفر الله) পড়ার মাধ্যমে একজন মুসলিম আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এটি ইসলামে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি দোয়া। বেশি বেশি আস্তাগফিরুল্লাহ পড়লে যেসব উপকার হয়:
ক. পাপ মোচন হয় :
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
প্রতি বেশি বেশি ইস্তিগফার পাঠ করবে আল্লাহ তা'আলা তার জন্য সমস্ত সংকট থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করেন, সমস্ত চিন্তা দূর করেন এবং তাকে অফকল্পনীয় রিজিক দান করেন। ( আবু দাউদ)
খ. আল্লাহর রহমত ও দয়া লাভ হয় :
ইস্তিগফার করলে আল্লাহ তার বান্দার প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ করেন এবং জীবনকে সুন্দর করে তোলেন।
গ. রিজিক বৃদ্ধি পায় :
কোরআনে বলা আছে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি পরম ক্ষমাশীল। আমি তোমাদের উপর আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং সন্তান-সন্ততি ও ধন সম্পত্তি প্রদান করবেন। ( সূরা নূহ - ১০-১২)
ঘ. মানসিক প্রশান্তি আসে :
বেশি বেশি ইস্তিগফার করলে হৃদয় প্রশান্তি আসে, মানসিক চাপ দূরে সরে যায়।
ঙ. দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায় :
রসুলুল্লাহ (সা,) বলেছেন,
যে ব্যাক্তি সর্বদা ইস্তিগফার করে, আল্লাহ তার সব বিপদ থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করেন। ( সহিহ মুসলিম)।
প্রতিদিন বেশি বেশি ইস্তিগফার করলে আল্লাহর রহমত, দয়া ও বরকত লাভ হয় এবং দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ নিশ্চিত হয়।
আস্তাগফিরুল্লাহ ১০০ বার পড়লে কি হয়?
আস্তাগফিরুল্লাহ (أستغفر الله) বলা হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া। এটি পড়ার ফলে অনেক ফজিলত ও উপকারিতা পাওয়া যায়।
আস্তাগফিরুল্লাহ ১০০ বার পড়লে অনেক উপকার হয় :
১। গুনাহ মাফ হয়।
২। রিজিক বৃদ্ধি পায়।
৩। অসুবিধা ও বিপদ থেকে মুক্তি।
৪। আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়।
৫। জান্নাত লাভের আশায়।
৬। বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৭। অন্তরে প্রশান্তি আসে ও দুশ্চিন্তা দূর হয়।
১০০ বার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার উপায় :
আপনি সহজেই দিনে ১০০ বার ইস্তিগফার করতে পারেন:
১। নামাজের পর ২০ বার করে পড়ুন।
২। সকালে ও সন্ধ্যায় ৫০ বার করে পড়ুন।
৩। যেকোনো সময় চলাফেরা, কাজের ফাঁকে পড়তে পারেন।
আস্তাগফিরুল্লাহ ১০০ বার পড়লে আল্লাহর ক্ষমা লাভ, দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, রিজিক বৃদ্ধি, বিপদ থেকে মুক্তি এবং জান্নাতের প্রতিদান পাওয়া যায়। এটি একটি সহজ কিন্তু অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল, যা আমাদের প্রতিদিন করা উচিত।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে বেশি বেশি ইস্তিগফার করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url